এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২০

করোনার মধ্যে কিং খান যেভাবে জন্মদিন পালন করবেন

বাদশা শাহরুখ খান কীভাবে জন্মদিন পালন করবেন এই মহামারীর মধ্যে? 

বলিউডের কিং খানের জন্মদিন আসন্ন প্রায়। আগামী ২রা নভেম্বর ২০২০ শাহরুখ খান ৫৫( জন্ম ১৯৬৫, ২রা নভেম্বর) বছরের কোঠায় পা রাখবেন। এই জন্মদিনের প্ল্যান কি? বলিউডের রাজা কি নতুন কিছু করতে চলেছেন এবছর? মনে তো হচ্ছে তাই! 
Photo: Shahrukh Khan

কিং খান জন্মদিন পালনের আদেশ দিয়েছেন দূর থেকে। "ইস বার কা প্যার, থোডা দূর সে ইয়ার..." এমনটাই বললেন শাহরুখ খান।

করোনার প্রভাবে বিশ্বব্যাপী জনজীবন বিধ্বস্ত। সমস্ত কিছু উল্টে পাল্টে গেছে। যাকে বলে আপ সাইড ডাউন। এর মধ্যেই মানুষ নিজেদের জন জীবন চালিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে, করোনার প্রভাব যথাসাধ্য এড়িয়ে।

এটা সর্বজনবিদীত, প্রত্যেক বছর বলিউডের বাদশার জন্মদিনে হাজার হাজার লোকে তাঁর মুম্বইয়ের বান্দ্রার বাড়ির সামনে হাজির হয় শাহরুখ খানের এক ঝলক দেখার জন্যে। শাহরুখ তার বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে ফ্যানদের উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে থাকেন এবং তাঁর বিখ্যাত পোজ় দিয়ে ভক্তদের মুগ্ধ করে দেন।
Photo: Shahrukh Khan

এবারে হয়তো তার ব্যতিক্রম ঘটতে চলেছে। #askSRK এর একটা টুইটার সিরিজে এক ফ্যান যখন জানতে চাই, শাহরুখ খানের জন্মদিন পালনের প্ল্যানের কথা, শাহরুখ তাঁর বাড়ির সামনে সবাইকে আসতে বারণ করে দিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্যে। টুইট করেছেন, "Please I recommend nobody should collect in crowds. My birthday or wherever! Iss baar ka pyaar...thodha door se yaar." যার তর্জমা হলো, "দয়া করে কেউ ভিড় জমা করবেন না, আমার বাড়ির সামনে হোক বা অন্য কোথাও, এবারের ভালোবাসা দূর থেকেই হোক"।

মুম্বই পুলিশ খেয়াল রাখবে যাতে বাড়ির সামনে কোনও জমায়েত না হয়। কিং খানের এই 'আদেশ" সত্যিই বাহাদুরি যোগ্য।

তবে শাহরুখ খানের ফ্যান ক্লাব কিন্তু বিশ্বব্যাপী অনলাইনের মাধ্যমে জন্মদিন পালন করবে বলে জানিয়েছে। শুধু জন্মদিন পালন নয়, সাথে সাথে কিছু দানমূলক কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। ৫৫৫৫ টি পিপিই কিট, ৫৫৫৫ টি স্যানিটাইজার বিতরণ এবং ৫৫৫৫ জন কে খাওয়ানোর আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আশা করা হচ্ছে শাহরুখ খান ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহন করবেন।
নীচে #askSRK এর সম্পূর্ণ টুইট পড়ুন।


শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০

ভারতীয় সেনা লঞ্চ করলো SAI নামক স্বদেশী মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন। ভারতীয় 'WhatsApp'

ভারতীয় 'WhatsApp' । ভারতীয় সেনা লঞ্চ করলো SAI নামক স্বদেশী মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন

  আত্মনির্ভর ভারতের দিকে আরেকটি ছোটো পদক্ষেপ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে একটি দেশীয় মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন তৈরী করে লঞ্চ করা হয়েছে। SAI বা 'Secure Application for the internet' নামের এই অ্যাপটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্যে হবে অনেক বেশি নিরাপদ। হোয়্যাট্সঅ্যাপের মতোই এই অ্যাপ দিয়ে ভয়েস, টেক্সট এমনি ভিডিও কলের মাধ্যমেও যোগাযোগ স্থাপন করা যাবে। আপাতত অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের জন্যে সাপোর্ট করবে এই অ্যাপ্লিকেশনটি এবং ভবিষ্যতে iOS বা অ্যাপেল ফোনের জন্যেও উপলব্ধ করা হবে, বৃহস্পতিবার সরকারি ভাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রক ঘোষণা করেছে, এক সাংবাদিক সম্মেলনে।

Photo: SAI, "Indian WhatsApp"

"এই মডেলটি বাণিজ্যিক ভাবে উপলব্ধ মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন, হোয়্যাট্সঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, সংবাদ, GIMS-এর মতোই এবং এখানেও end-to-end eccription প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। SAI অ্যাপ্লিকেশনটি স্থানীয় ইন-হাউস সার্ভার এবং কোডিং এর উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়েছে, যা প্রয়োজন মতো পরিবর্তন করা যেতে পারে", বলে বিবৃতি দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

অ্যাপ্লিকেশনটির প্রয়োজনীয়তাঃ

ফেসবুক, টেলিগ্রাম, হোয়্যাট্সঅ্যাপ বা অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন গুলো যে পুরোপুরি সুরক্ষিত নয় একথা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে আসছে। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্য ও  অভ্যন্তরীণ ডেটা এই সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কোনো না কোনো ভাবে বাইরের জগতে ছড়িয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ ছিলো। শুধু তাই নয় বছরের শুরুতে প্রায় ছিয়াশিটি অ্যাপ্লিকেশন ভারতীয়দের জন্যে ব্যান করে দেওয়া হয়। যদিও হোয়্যাট্সঅ্যাপ বা টেলিগ্রাম সেই বাতিল করে দেওয়া অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে ছিলো না, তবুও একটি নতুন স্বদেশী অ্যাপ্লিকেশনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিলো। আর সেই প্রয়োজনীয়তার তাগিদ থেকেই এরকম একটি নিরাপদ আর সুরক্ষিত অ্যাপ্লিকেশনের জন্ম হয়েছে। আত্মনির্ভর ভারতের দিকে এই পদক্ষেপ বা প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, ভারতীয়দের স্বনির্ভরতার একটি নিশ্চিতি প্রতীক।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, কার্নেল সাই শংকরের ভূয়শী প্রশংসা করেছেন তাঁর দক্ষতা এবং এই মহান উদ্যোগকে সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্যে। মন্ত্রক আরো জানিয়েছে, এই অ্যাপ্লিকেশনটি সারা ভারতবর্ষের সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি একটা সফটওয়ার ডেভেলপ করা হবে যার মাধ্যমে আরও কয়েকটি সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সমস্ত ধরণের সেনাবাহিনীর প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ, জরুরি নোটিশ জারি ইত্যাদির জন্যে সেই সফটওয়্যারটি ব্যবহৃত হবে।

অ্যাপ্লিকেশনটির কপিরাইট রক্ষার জন্যে IPR(Intellectual Property Rights)-এর কাজকর্ম শুরু হয়েছে NIC এর মাধ্যমে।

আরও কিছু জানতে চান? কমেন্ট করুন নীচে। আমরা হাজির হবো আপনার উত্তর নিয়ে। 

মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০

ফ্রিজের দুর্গন্ধ কী করে দূর করবেন?

ফ্রিজের দুর্গন্ধ কী করে দূর করবেন(How to Remove Bad Odur/Smell from the Fridge?) 

দরকার পড়লে বাড়ির বা দোকানের ফ্রিজ অনেক সময়ে বন্ধ করা হয় বেশ কিছুদিনের জন্যে। ফ্রিজ যদি অনেকদিন বন্ধ করে রাখা হয়, তাহলে খাবার বা পানীয় পচে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এই দুর্গন্ধ দূর করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। ফ্রিজ জল বা সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে দিলেও দুর্গন্ধ থেকেই যায়।

Photo: Fridge Bad Smell

এই দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু উপায় আজকে আলোচনা করবো। 

ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করতে যে উপাদান গুলো লাগবে সেগুলো সাধারণত বাড়িতেই মজুদ থাকে অথবা আশে পাশের দোকানেই পাওয়া যাবে। 

এগুলো পুরোপুরি ঘরোয়া, শতভাগ ফলপ্রসূ এবং এক থেকে দু ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল পাওয়া যায়। 

তাহলে একে একে দেখে নেওয়া যাক কী কী করতে হবে।

পদ্ধতি ১।

লেবু জলঃ

প্রথমেই ভেজা কাপড়ে হালকা সাবান দেওয়া জল দিয়ে ভালোভাবে মুছে নিন। তারপর হালকা গরম জল করে লেবুর রস দিন। সেই লেবু জল দিয়ে পুরো ফ্রিজের ভেতরের অংশ কোণায় কোণায় হাত দিয়ে মুছে নিন। ফ্রিজের গন্ধ খুব বেশি থাকলে একটা লেবু কেটে টুকরো গুলো ফ্রিজের এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে দিন। তারপর ফ্রিজ চালু করে দরজা বন্ধ করে দিন 1 ঘন্টার জন্যে। এর পর যখন ফ্রিজের দরজা খুলবেন, আহা, "লেবুর গন্ধে ঘুম আসেনা, একলা জেগে রই...."

পদ্ধতি ২।

খাবার সোডা বা বেকিং সোডাঃ

রাসায়নিক নাম, সোডিয়াম বাই কার্বনেট। হালকা গরম জলে এই সোডা গুলে নিয়ে একটা পাত্রে ফ্রিজের মধ্যে রেখে দিন। এখন ফ্রিজ চালিয়ে দিন। ঘন্টা খানেক এইভাবে রেখে দিয়ে ফ্রিজ খুলে দেখুন। গন্ধ যদি খুব বেশি থাকে তাহলে কয়েকটা পেপারে একটু একটু করে সোডা ছিটিয়ে দিয়ে আরো এক থেকে দুই ঘন্টা রাখুন। গন্ধ যুক্ত জলীয় বাষ্প শোষিত হয়ে যাবে। 

পদ্ধতি ৩।

কফি পাউডারঃ

বাড়িতে কফি পাউডার মজুদ থাকলে কয়েকটা কাগজে একটু একটু করে কফি পাউডার ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফ্রিজের এদিকে ওদিকে রেখে দিন এবং ফ্রিজ চালু করে দিন। 1 ঘন্টা মতো রাখার পরে ফ্রিজ খুলে দেখুন। ফ্রিজের সব দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে এবং কফির সুগন্ধ ছেয়ে থাকবে ফ্রিজের মধ্যে।

পদ্ধতি ৪। 

লবঙ্গ ও লেবুর টুকরোঃ

কয়েকটা পাতিলেবু কয়েক টুকরো কেটে নিয়ে প্রত্যেকটা টুকরোতে দুই তিনটি করে লবঙ্গ গুঁজে দিন এবং ফ্রিজ চালু করে ঘন্টা দুয়েক রেখে দিন। এতে ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর হবে এবং সুন্দর ফ্রেশ গন্ধ ছড়িয়ে থাকবে। 

Photo: Lemon and Clove

উপরোক্ত উপাদান গুলো সহজেই বাড়িতে বা আসে পাশের দোকানে কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়াও রান্নার কাজে ব্যবহৃত ভিনেগারে তুলোর বল ভিজিয়ে দিয়ে ফ্রিজের মধ্যে ঘন্টা দুয়েক রেখে দিলেও ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।

অতিরিক্ত টিপসঃ

ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার কিছু ফলপ্রসূ অতি সহজ ঘরোয়া পদ্ধতি আমরা জেনে নিলাম। এবার যেটা বলবো সেটা হলো, ফ্রিজে যাতে দুর্গন্ধ না হয় তার ব্যবস্থা করা।

ফ্রিজ বন্ধ করার সময়ে সমস্ত খাবার ও পানীয় বের করে নিন। তারপরে ভেজা কাপড় ও সাবান জল দিয়ে পরিষ্কার কাপড় নিয়ে পরিষ্কার করুন। ফ্রিজের কোণগুলোতে সবজি বা খাবারের কণা লুকিয়ে থাকে যা পচে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়।

ফ্রিজ ভালোভাবে পরিষ্কার হয়ে গেলে ঘন্টা খানেকের জন্যে ফ্রিজ চালু করে রাখুন যাতে সমস্ত জল শুকিয়ে যায়। তারপর ফ্রিজ বন্ধ করে দিন।

কয়েকটা কাগজে খাবার সোডা বা কফি পাউডার ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতে পারেন। লেবু বা তরল ভিনেগার রাখতে যাবেন না, কারণ সেগুলো বন্ধ ফ্রিজে পচে গিয়ে গন্ধ ছড়াতে পারে। 

সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০

কুলম্বের সূত্র (Coulomb's law) | তড়িৎ বিভব কাকে বলে, বুঝিয়ে দাও। তড়িৎ বিভবের মাত্রা

কুলম্বের সূত্র (Coulomb's law)

i) দুটি স্থির বিন্দু আধানের মধ্যে কার্যকর আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল আধানদ্বয়ের পরিমাণের গুণফলের সমানুপাতিক এবং

ii) তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক।

এই বল আধানদ্বয়ের সংযােজী রেখা বরাবর ক্রিয়া করে এবং এর মান আধানগুলি যে মাধ্যমে অবস্থিত হয় তার প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।
Photo : Coulomb's Law

ধরা যাক, দুটি আধান q1, ও q2 পরস্পর থেকে r দূরত্বে অবস্থিত। এদের মধ্যে কার্যকর বলের মান F হলে, কুলম্বের সূত্রানুযায়ী,

F ∝ q1q2  এবং F ∝ 1/r2 অর্থাৎ F ∝ q1q2/r2,

গাণিতিক ভাবে, 

Photo : Mathematical Expression of Coulomb's Law
যেখানে k একটি ধ্রুবক যার মান F, q1, q2, ও r-এর এককের উপর এবং যে মাধ্যমে আধান দুটি অবস্থিত তার প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। এই  ধ্রুবকটিকে বলা হয় স্থির তড়িৎ বল ধ্রুবক বা কুলম্ব ধ্রুবক। বায়ুর ক্ষেত্রে CGS পদ্ধতিতে k = 1 হয়। সেক্ষেত্রে সূত্রটিকে লেখা যায়, F =(q1q2)/r2 


তড়িৎ বিভব কাকে বলে, বুঝিয়ে দাও। 

তড়িৎ বিজ্ঞানে তড়িৎ বিভব’-এর ধারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তড়িৎ প্রবাহমাত্রা মান ও প্রবাহের অভিমুখ নির্ধারণের জন্য তড়িৎ বিভব’ তথা বিভব পার্থক্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রয়োজন।

তড়িৎ বিভবঃ কোনাে পরিবাহী তড়িদাহিত হলে ওই পরিবাহী অন্য কোনাে পরিবাহীকে তড়িৎ দিতে পারে কিংবা অন্য কোনাে পরিবাহী থেকে তড়িৎ নিতে পারে। পরিবাহীর এই রকম তড়িৎ অবস্থাকে ওর তড়িৎ বিভব বলা হয়।

উচ্চ বিভব ও নিম্ন বিভবঃ কোনো একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণ ধনাত্মক আধান উপস্থিত থাকলে সেই ক্ষেত্রটি উচ্চবিভবে আছে বলা হয় এবং অনুরূপভাবে কোনাে একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণ ঋণাত্মক আধান উপস্থিত থাকলে সেই ক্ষেত্রটি নিম্নবিভবে আছে বলা হয়। এখন প্রচলিত রীতি অনুযায়ী তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ সর্বদা ইলেকট্রন (ঋণাত্মক আধানে আহিত)-এর গতির অভিমুখ বিপরীত দিকে হয়।

বিভবপার্থক্যঃ দুটি সমজাতীয় বা বিপরীত জাতীয় তড়িৎগ্রস্ত বস্তুর মধ্যে বিভবের যে পার্থক্য হয়, তাকে ওদের বিভব প্রভেদ বা বিভব পার্থক্য (potential difference) বলা হয়।

কার্যের ধারণা থেকে বিভবের ধারণাঃ
অসীম দূরত্ব থেকে একটি একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনাে বিন্দুতে আনতে যে পরিমাণ কার্য করতে হয় তাকে ওই বিন্দুর তড়িৎ বিভব বলে। 

গাণিতিকভাবে, অসীম দূরত্ব থেকে +Q একক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনাে বিন্দুতে আনতে যদি একক কার্য করতে W কৃতকার্য হয় তবে ঐ বিন্দুর তড়িৎ বিভব হয়, V=W/Q একক।
অতএব, তড়িৎ বিভব = কৃতকার্য/আধান।

রাশিঃ কার্য এবং আধান উভয়ই স্কেলার রাশি হওয়ায় তড়িৎ বিভব স্কেলার রাশি।

তড়িৎ বিভবের মাত্রা=
[কার্যের মাত্রা/আধানের মাত্রা] =[ML2T-2]/[IT]=[ML2T-3I-1]

তড়িৎ বিভবের এককঃ তড়িৎ বিভবের CGS একক হল esu বা স্ট্যাটভােল্ট (statvolt) এবং SI ও ব্যবহারিক একক হল ভোল্ট (volt)।

তড়িৎবিভব মাপক যন্ত্রের নামঃ ভোল্টামিটার(Voltameter)

একটি সরল ভােল্টীয় কোশের তড়িৎচালক বলের মান হয় 1.08 ভােল্ট,একটি নির্জল কোশ (Dry cell)-এর তড়িৎচালক বলের মান হয় 1.5 ভােল্ট।
এই কোশের বিভব পার্থক্য নির্ভর করবে কোশের অভ্যন্তরীণ রোধ এবং সংযুক্ত রোধের উপর। 

1 volt = 1/300 esu বিভব।

কোনাে বিন্দুর তড়িৎবিভব 1 V বলতে বােঝায় অসীম দূরত্ব থেকে একটি 1 C ধনাত্মক আধানকে ওই বিন্দুতে আনতে 1 জুল কার্য করতে হবে।
1 ভোল্ট = 1 জুল /1 কুলম্ব 

কার্যের ধারণা থেকে বিভবভেদের ধারণাঃ দুটি বিন্দুর মধ্যে বিভবপার্থক্য হল একটি বিন্দু থেকে অপর বিন্দুটিতে একক ধনাত্মক আধান নিয়ে যেতে কৃতকার্যের পরিমাণ।

বিভবভেদের এককঃ বিভবপ্রভেদের SI ও ব্যবহারিক একক হল ভােল্ট (Volt)।

দুটি বিন্দুর মধ্যে বিভবপ্রভেদ 1 V বলতে বােঝায় এক বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে 1C ধনাত্মক আধান নিয়ে যেতে 1 জুল কার্য করতে হয়। 

জেনে রাখা ভালো, পৃথিবীর তড়িৎবিভবের মান শূন্য ধরা হয়। একটি বস্তু ধনাত্মক তড়িৎগ্রস্ত বলতে বােঝায় বস্তুটির বিভব পৃথিবীর বিভবের তুলনায় বেশি এবং একটি বস্তু ঋণাত্মক তড়িৎগ্রস্ত বলতে বােঝায় বস্তুটির বিভব পৃথিবীর বিভবের তুলনায় কম।


স্থির তড়িৎ ও চল তড়িৎ। তড়িৎ আধানের একক ও মাত্রা। 

তড়িদাধান (Electric charge)

দুটি বস্তুর মধ্যে ঘর্ষণে বস্তু দুটিতে তড়িতের সঞ্চার হয় এবং যখনই কোনাে বস্তুতে তড়িতের সঞ্চার ঘটে, তখন বলা হয় যে, বস্তুটি তড়িদাহিত হয়েছে।

তড়িৎ দুই ধরনের, যথা

(i) স্থির তড়িৎ (Static electricity) এবং

(ii) চলতড়িৎ (Current electricity)।

যে তড়িৎ উৎপত্তিস্থলেই স্থির অবস্থায় আবদ্ধ থাকে এবং সেই স্থান থেকে অন্যত্র যেতে পারে না তাকে বলা হয় স্থির তড়িৎ এবং যে তড়িৎ পরিবাহীর মধ্য দিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে তাকে বলা হয় চল তড়িৎ। 

যে ভৌত ধর্মের জন্য কোনাে বস্তু কণাকে একটি তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে কণাটি একটি বল অনুভব করে তাকেই তড়িদাধান বলে। তড়িদাধান দুই প্রকার হয়- (i) ধনাত্মক ও (ii) ঋণাত্মক

যে-কোনাে বস্তুর আহিতকরণের ব্যাখ্যা করা যায় ইলেকট্রনের আধিক্য বা ঘাটতির সাহায্যে। দুটি বস্তুর মধ্যে ঘর্ষণের ফলে একটি বস্তু থেকে অন্যটিতে ইলেকট্রনের স্থানান্তর ঘটে। যে বস্তুটি ইলেকট্রন হারায় সেই বস্তুটি ধনাত্মক আধান গ্রস্ত হয়। যে বস্তুটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে সেটি ঋণাত্মক আধানগ্রস্ত হয়।

আধানের মাত্রা ও এককঃ

  • গাণিতিক ভাবে তড়িৎ আধানকে Ampere*Second দ্বারা প্রকাশ করা যায়। তাই তড়িদাধানের মাত্রা [IT];
  • তড়িদাধানের CGS একক esu বা স্ট্যাটকুলম্ব
  • তড়িদাধানের SI একক হল কুলম্ব (C)।

1 C = 3 x 109 esu বা স্ট্যাটকুলম্ব

তড়িৎ আধান কী ধরণের রাশিঃ স্কেলার রাশি 


তড়িৎচালক বল (electromotive force) বা EMF।

তড়িচ্চালক বল এবং তড়িৎচালক বলের উৎস হিসেবে তড়িৎ কোষ (Electromotive force and electric cell as a source of EMF)।

কোনাে স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে হলে যেমন বল প্রয়ােগ করতে হয়, তেমনই কোনাে পরিবাহীতে তড়িৎ প্রবাহমাত্রা সৃষ্টি করার জন্য বা প্রবাহ বজায় রাখার জন্য একটি বলের প্রয়ােজনীয়তার কথা ভাবা যায়। একেই বলা হয় তড়িৎচালক বল (electromotive force) বা সংক্ষেপে EMF।

একথা মনে রাখা আবশ্যক যে, ভিন্ন বিভবযুক্ত দুটি বস্তুকে একটি পরিবাহী দ্বারা যুক্ত করলে উচ্চ বিভবযুক্ত বস্তু থেকে নিম্ন বিভবযুক্ত বস্তুতে ধনাত্মক আধান প্রবাহিত হয়ে তড়িৎ প্রবাহমাত্রার সৃষ্টি করবে। সুতরাং, বিভব পার্থক্যের কারণে তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়। কাজেই তড়িচ্চালক বল কে নিম্নলিখিতভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়—

তড়িৎচালক বলের সংজ্ঞাঃ যার প্রভাবে বা যে কারণে তড়িৎ বর্তনীর কোনাে অংশে রাসায়নিক শক্তি বা অন্য কোনাে প্রকার শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি করে তাকে বলা হয় তড়িচ্চালক বল (EMF)।

তড়িচ্চালক বলের এককঃ তড়িচ্চালক বলের SI এবং ব্যবহারিক একক ভােল্ট(Volt)। 

তড়িচ্চালক বল কোন ধরনের রাশিঃ এটি একটি স্কেলার রাশি। 

তড়িচ্চালক বলের মাত্রাঃ তড়িৎচালক বলকে গাণিতিক ভাবে SI পদ্ধতিতে জুল/কুলম্ব বলা যেতে পারে। অর্থাৎ তড়িৎচালক বলের মাত্রা হবে [কার্যের মাত্রা]/[আধাানের মাত্রা] = [ML2T-2]/[IT]=[ML2T-3I-1

তড়িৎচালক বলের উৎসঃ তড়িৎচালক বলের উৎস হল এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে কোনাে না কোনাে প্রকার শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। ডায়নামাে, তাপযুগ্ম, তড়িৎ কোশ, আলোক-তড়িৎ কোশ প্রভৃতি হল তড়িচ্চালক বলের উৎস।

তড়িচ্চালক বল মাপার যন্ত্রঃ পোটেনশিওমিটার ।

কার্য করার জন্য প্রয়ােজনীয় শক্তির উৎস হিসেবে তড়িৎকোশঃ

সচল যন্ত্রাংশবিহীন তড়িৎ উৎসই হল তড়িৎকোশ। তড়িৎকোশ রাসায়নিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে বর্তনীতে স্থায়ী তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টি করে।

বিচ্ছিন্ন বা মুক্ত অবস্থায় কোনাে তড়িৎকোশের তড়িদ্দার দুটির মধ্যে যে বিভবপার্থক্যের সৃষ্টি হয় তাকেই বলা হয় কোশটির তড়িৎচ্চালক বল। একটি সরল ভােল্টীয় কোশের তড়িৎচালক বলের মান হয় 1.08 ভােল্ট,একটি নির্জল কোশ (Dry cell)-এর তড়িৎচালক বলের মান হয় 1.5 ভােল্ট।

কোনাে কোষের তড়িচ্চালক বল 1.5 ভোল্ট বলতে বােঝায় যে, কোষের ধনাত্মক মেরু থেকে ঋণাত্মক মেরুতে 1 কুলম্ব তড়িদাধান নিয়ে যেতে কৃতকার্যের পরিমাণ হয় 1.5 জুল।


বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

গ্রিনহাউস প্রভাব বা ইফেক্ট | Greenhouse Effect in Bengali

গ্রিনহাউস প্রভাব বা এফেক্ট

বায়ুমণ্ডলে মূলত CO2-এর ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনাকে বলে গ্রিনহাউস প্রভাব বা এফেক্ট। 

ব্যাখ্যাঃ গ্রিনহাউস প্রভাব বা এফেক্ট হল পরিবেশকে দূষিত করার একটি অন্যতম পদ্ধতি। ইংরেজি গ্রিনহাউস শব্দটির অর্থ হল গাছপালা পরিচর্যার জন্য কাচের ঘর। এই কাচের ঘরের মধ্যে দিয়ে সুর্যের আলাে যেমন ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আকারে অবাধে প্রবেশ করে এবং ওই ঘরের তাপমাত্রা বাড়ায় তেমনই পৃথিবীকে বিশাল কাচের ঘরের মতাে বা গ্রিনহাউসের মতাে ঘিরে রয়েছে বায়ুমণ্ডল। সৌরশক্তি এই বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের ভিতর দিয়ে ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছায় এবং পুনরায় বৃহৎ তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অবলোহিত রশ্মি (infrared ray) রূপে মহাশূনে ফিরে যাওয়ার সময় কিছু তাপশক্তি আবদ্ধ হয়। ফলে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।

গ্রিনহাউস গ্যাসঃ বায়ুমণ্ডলে যে সমস্ত গ্যাসের উপস্থিতির জন্য গ্রিনহাউস ক্রিয়া সংঘটিত হয় তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস বলে।

যেমন CO2 (প্রধান), জলীয় বাষ্প, মিথেন, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন, নাইট্রাস অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টি করে। গবেষণায় দেখা গেছে বড়াে বড়াে শহর যেমন—

দিল্লি, মুম্বই, কলকাতায় অরণ্য নিধনের ফলে অতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যান চলাচলে CO-এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানকার উষ্ণতা 4°C থেকে 6°C বেড়েছে। মনে রাখবে O2 এবং N2 গ্রিনহাউস গ্যাস নয়।

গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধিঃ গ্রিনহাউসের প্রভাবে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে বেড়ে চলেছে। যেমন— 1850 থেকে 1900 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে 0.5°C।

আবার, 1900 থেকে 2000 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তাপমাত্রা বেড়েছে 1°C। সুতরাং, প্রাকৃতিক পরিবেশ যে ক্রমশ গরম হয়ে উঠেছে সে বিষয়ে কোনাে সন্দেহ নেই। সারা পৃথিবী জুড়ে উষ্ণতার ক্রমবর্ধমান অবস্থাকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বলে।

গ্রিনহাউস প্রভাব ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলাফলঃ

  1. পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে মেরু অঞ্চলে জমে থাকা বরফ আরও বেশি করে গলবে।
  2. বরফ গলা জল সমুদ্রের জলে যুক্ত হয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি করবে।
  3. সমুদ্রপৃষ্ঠের জলতল বাড়ার জন্য উপকূলের নীচু জমি জলমগ্ন হবে।
  4. ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ প্রভৃতি দেশের কিছু অংশ জলে ডুবে যাবে।
  5. উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে দাবানলের দ্বারা বনভূমি নষ্ট হবে।

গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসে কার্যকারী এবং দৈনন্দিন জীবনে রূপায়িত করা সম্ভব এমন কিছু উপায়ঃ

  1. জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমালে CO2-এর উৎপাদন হ্রাস পাবে। সেই দিকে লক্ষ রেখেই অপ্রচলিত বা পুনর্নবীকরণযােগ্য শক্তির ব্যবহারে আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে।
  2. গ্রিনহাউস প্রভাবকে হ্রাস করার জন্য বনভূমি একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তাই বনভূমি সংরক্ষণে যথেষ্ট নজর দিতে হবে। অর্থাৎ, বনভূমি ধ্বংস না করে আরও নতুন বনভূমি সৃষ্টির জন্য পরিকল্পনা নিতে হবে। 
  3. ক্লোরােফ্লুরােকার্বন জাতীয় পদার্থের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। সম্ভব হলে সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০২০

রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমীকরণ (Stoichiometric Equations) | রাসায়নিক বিক্রিয়াকে একটি পারমাণবিক ঘটনা বলা হয় কেন?

 রাসায়নিক গণনাঃ কোনাে রাসায়নিক সংকেত বা রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমীকরণ থেকে বিভিন্ন পদার্থের ভর, আয়তন, বাষ্প ঘনত্ব ইত্যাদি নির্ণয় করাকে রাসায়নিক গণনা বলে।

রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমীকরণ (Stoichiometric Equations) 

বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের পরমাণু সংখ্যার সমতা বজায় রেখে চিহ্ন ও সংকেতের সাহায্যে কোনাে রাসায়নিক বিক্রিয়ার সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে রাসায়নিক সমীকরণ বলে।

উদাহরণঃ  হাইড্রোজেন এবং ক্লোরিনের বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়। এখানে বিক্রিয়ক হল হাইড্রোজেন ও ক্লোরিন এবং বিক্রিয়াজাত পদার্থ হল হাইড্রোজেন ক্লোরাইড। বিক্রিয়াটির রাসায়নিক সমীকরণ হল H2 + Cl2= 2HCl

রাসায়নিক সমীকরণের তাৎপর্যঃ  রাসায়নিক সমীকরণ থেকে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি জানা যায়।

গুণগত তথ্যঃ রাসায়নিক সমীকরণের গুণগত তথ্য হিসেবে জানা যায় -

1) বিকারক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের সংকেত ও নাম।

2) বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পদার্থগুলো উপস্থিত মৌলের নাম ও চিহ্ন। 3 বিকারক ও বিক্রিয়ক পদার্থের আণবিক সংযুক্তি।

পরিমাণগত তথ্যঃ পরিমাণগত তথ্য হিসেবে রাসায়নিক সমীকরণ থেকে জানা যায়ঃ

1) বিক্রিয়ক ও উৎপন্ন পদার্থের অণু ও পরমাণুর সংখ্যা।

2) বিকারক ও উৎপন্ন পদার্থসমূহের ওজন ও তাদের অনুপাত।

3) বিক্রিয়ক ও উৎপন্ন পদার্থ গ্যাসীয় হলে সমচাপ ও উয়তায় এদের আয়তনগত অনুপাত।

4) বিক্রিয়ক ও উৎপন্ন পদার্থের ভরের সমতা সাপেক্ষে ভর সংরক্ষণ সূত্রের সত্যতা।

উদাহরণঃ 2H2 + O2=2H2O এই সমীকরণ থেকে আমরা যে যে তথ্য পাই সেগুলি নীচে দেওয়া হলঃ

গুণগত তথ্যঃ

1) বিকারকের নাম হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এবং তাদের সংকেত যথাক্রমে H2 ও O2। বিক্রিয়াজাত পদার্থ হল জল ও তার সংকেত H2O।

2) হাইড্রোজেনের চিহ্ন হল H এবং অক্সিজেনের চিহ্ন হল O।

3) জল হল হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন মৌলের একটি যৌগিক পদার্থ।

পরিমাণগত তথ্যঃ

1) 2-অণু হাইড্রোজেন এবং 1 -অণু অক্সিজেনের পারস্পরিক বিক্রিয়ায় 2-অণু জল গঠিত হয়। 4-পরমাণু হাইড্রোজেন এবং 2-পরমাণু অক্সিজেন, মােট 6টি পরমাণু দিয়ে 2-অণু জল সৃষ্টি হয়।

2)

2H2                +               O2      =       2H2

2x2x1= 4        +        2x16=32  =       2(2x1+16)=32

4 ভাগ ওজনের হাইড্রোজেন 32 ভাগ ওজনের অক্সিজেনের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে 36 ভাগ জল উৎপন্ন করে।H2, O2 H2O-এর ওজনগত অনুপাত হল 4: 32:36 বা 1: 8:9 ।

3) গ্যাসীয় অবস্থায় হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন যুক্ত হয়ে স্টিম উৎপন্ন করলে যদি প্রত্যেকটির আয়তন উষ্ণতা ও চাপে নির্ণীত হয়, তবে তাদের আয়তনগত অনুপাত হয় 2 : 1 : 2।

4) 4 ভাগ ভরের H এবং 32 ভাগ ভরের O অর্থাৎ মােট 36 ভাগ ভরের বিক্রিয়ক উৎপন্ন করে 36 ভাগ ভরের জল অর্থাৎ বিক্রিয়াজাত পদার্থ। উভয়পক্ষে মােট ভরের পরিমাণ সমান হওয়ায় নিশ্চিতরূপে জানা গেল যে, ভরের সংরক্ষণ সূত্র মান্য হয়।


কেরোসিন বা কয়লা পুড়তে অক্সিজেন চাই। কিন্তু খােলা হাওয়ায় কেরােসিন বা কয়লা কি নিজে নিজ জ্বলে ওঠে?

রাসায়নিক বিক্রিয়ার অন্যতম প্রয়ােজনীয় প্রভাবক হল তাপ। কেরোসিন বা কয়লার দহনের জন্য প্রয়ােজনীয় উষ্ণতা খােলা হাওয়ায় থাকে না, তাই উপযুক্ত তাপের অভাবে এই সকল দাহ্য পদার্থ নিজে নিজে জ্বলে ওঠে না।


রাসায়নিক বিক্রিয়াকে একটি পারমাণবিক ঘটনা বলা হয় কেন?

উত্তর। 

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরমাণু অংশগ্রহণ করে। বিক্রিয়ায় সম্পূর্ণ নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থের অণু গঠিত হলেও বিক্রিয়ায় অংশ গ্রহণকারী পদার্থের পরমাণুর সংখ্যা ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের পরমাণুসংখ্যা সর্বদা সমান থাকে। বিক্রিয়ার আগে ও পরে মােট ভর সমান থাকে। তাই বলা যায়, রাসায়নিক বিক্রিয়া একটি পারমাণবিক ঘটনা।

তড়িৎ প্রবাহমাত্রা কাকে বলে? তড়িৎ প্রবাহমাত্রার একক কী?

 তড়িৎ প্রবাহমাত্রা (Electric Current)

তড়িৎচালক বলের প্রভাবে কোনাে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে রক্ত ইলেকট্রনের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহই হল তড়িৎপ্রবাহ। প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী ধনাত্মক আধানের প্রবাহের অভিমুখ কি তড়িৎ প্রবাহমাত্রার অভিমুখ ধরা হয়। কাজেই পরিবাহীর মুক্ত ইলেকট্রনের প্রবাহ যে অভিমুখে ঘটে তড়িৎ প্রবাহ মাত্রার অভিমুখ তার বিপরীত দিকে ধরা হয়।

Photo: Current
তড়িৎ প্রবাহমাত্রা 

তড়িৎ প্রবাহমাত্রাঃ

পরিবাহীর যে-কোনাে প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ ধনাত্মক আধান প্রবাহিত হয় তাকে ওই পরিবাহীর প্রবাহমাত্রা বলা হয়।

পরিবাহীর কোনাে প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে যদি t সেকেন্ড সময়ে Q পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয় তবে ওই পরিবাহীর প্রবাহমাত্রা হয় I = Q/t অর্থাৎ, প্রবাহমাত্রা = আধান/সময়

রাশিঃ তড়িৎ প্রবাহমাত্রার শুধু মান আছে, তাই এটি একটি স্কেলার রাশি।

তড়িৎ প্রবাহমাত্রার এককঃ তড়িৎ প্রবাহমাত্রা CGS একক হল emu (Electromagnetic unit) এবং SI পদ্ধতিতে ব্যবহারিক একক হল অ্যাম্পিয়ার (A)। 

কোনাে পরিবাহীর যে-কোনাে প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে 1 সেকেন্ডে 1 কুলম্ব আধান প্রবাহিত হলে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা হয় 1 অ্যাম্পিয়ার (A)।

1 emu প্রবাহমাত্রা = 10 A প্রবাহমাত্রা

তড়িৎ প্রবাহ দুই ধরনের হয়, যেমন-

1) সমপ্রবাহ(Direct current or DC) এবং 

2) পরবর্তী প্রবাহ(Alternating Current or AC) 

1) সমপ্রবাহঃ এই ধরনের তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ সবসময় একই দিকে হয়।

তড়িৎকোশ সমপ্রবাহ সৃষ্টি করতে পারে। 

2) পরিবর্তী প্রবাহঃ এই ধরনের তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিপরীত দিকে পরিবর্তিত হয়।

AC ডায়নামোর সাহায্যে পরিবর্তী তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি করা যায়।

Featured Post

ব্রয়লার মুরগি কীভাবে তৈরি করা হয়?

উত্তর:  এটি একপ্রকার সংকর জাতের মুরগি। করনিস জাতের পুরুষ মুরগির সঙ্গে সাদা প্লিমাউথ রক জাতের স্ত্রী মুরগির মিলনে ব্রয়লার মুরগি তৈরি করা হয়...

Popular Posts