নিউক্লীয় বলের (Nuclear Force) বৈশিষ্ট্য কী?
- নিউক্লীয় বলের অস্তিত্ব শুধুমাত্র নিউক্লিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
- এই বলের শুধুমাত্র আকর্ষণ ক্ষমতা আছে, বিকর্ষণ ক্ষমতা নেই।
- এই বল কেবলমাত্র নিউট্রন ও প্রোটনের মধ্যে 3 ক্রিয়াশীল থাকে।
নিউক্লীয় বলের (Nuclear Force) বৈশিষ্ট্য কী?
একটি পাত্রে জল নিয়ে তা উনুনে বসিয়ে ফোটাতে থাকলে কী দেখা যাবে? কেন?
উত্তর:
ইনজেকশান বা স্যালাইন নেওয়ার সময়ে ওষুধের সাথে সাথে, রক্তের মধ্যে হাওয়া, বুদবুদের আকারে ঢুকে যেতে পারে। খুব কম পরিমাণ হাওয়া ঢুকলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
কিন্তু বড়ো আকারের হাওয়ার বুদবুদ ঢুকে গেলে, ভয়ের কারণ হতেও পারে।
এবার দেখা যাক, "বড়ো আকার" মানে কতো বড়ো। সেটাও নির্ভর করে কোন ধরণের রক্তনালীতে হাওয়া ঢুকছে।
আমাদের শরীরে সাধারণত দুই ধরণের রক্তনালী আছে।ধমনী(Artery) ও শিরা(Vein)। ধমনীর সাধারণ সংজ্ঞা হলো, যে রক্তবাহী নালী দিয়ে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে তাকে ধমনী(Artery) বলে । অন্যদিকে যে রক্তবাহী নালী দিয়ে সারা শরীর থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত বাহিত হয়ে ফুসফুসে পৌঁছায়(আবার শুদ্ধ হয়ে অক্সিজেন সমৃদ্ধ হওয়ার জন্যে) তাকে শিরা(Vein) বলে ।
শিরা আর ধমনীর গঠনগত পার্থক্যও আছে। কার্যগত এবং গঠনগত পার্থক্যের জন্যে হাওয়ার বুদবুদ ধমনী বা শিরাতে প্রবেশ করলে আলাদা আলাদা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এবার ধরা যাক হাওয়ার বুদবুদের আকার "খুব" বড়ো। মানে বুদবুদটি রক্তবাহী নালী রুদ্ধ বা ব্লক করে দিতে পারে, যেটা কখনোই কাম্য নয়। নিচের ছবিটা লক্ষ্য করুন।
দেখে আন্দাজ করাই যায়, বুদবুদ যদি এতটাই বড়ো হয়, যেটা সাধারণ রক্ত চলাচল ব্যাহত করে তাহলে সেটা প্রাণঘাতি হতেও পারে। আর এই বুদবুদের কারণে রক্তবাহ বন্ধ হওয়ার ঘটনা কে মেডিকেল টার্মে Air Embolism বা Gas Embolism বলা হয়।
যদি বুদবুদের আকার ছোটো হয় তাহলে বুদবুদ পুরো রক্তনালী( শিরা হোক বা ধমনী) বন্ধ করতে পারেনা, এবং কোনো সমস্যা হওয়ার কথাও না।
এখানে আরেকটা জিনিস মাথায় রাখা দরকার। শিরা বা ধমনীর ভেতরের ব্যাস শরীরের একেক জায়গায় একেক রকম।
মানে বুদবুদ শরীরের এক অংশে "ছোটো" হলেও হয়তো অন্য অংশে গিয়ে সেখানে ব্লকেজ করতে পারে। সে ক্ষেত্রেও embolism ঘটতে পারে।
তাহলে কি Embolism হলেই মৃত্যু অনিবার্য?
এর ছোটো উত্তর হলো, "না"। বড়ো উত্তর এরকম।
ধরা যাক, হাতের নালীতে ইনজেকশন দেওয়ার সময় "বড়ো" আকারের বুদবুদ চলে গেলো রক্তের মধ্যে, এবং সেটা হাতের মধ্যেই Embolism সৃষ্টি করলো। মানে হাতের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলো। আপনি কি মরে যাবেন? কখনোই না, হয় তো হাত অসাড় হয়ে যাবে কিছুক্ষণের জন্যে। হাওয়ার বুদবুদ বের করে নিলেই আবার হাত সুস্থ হয়ে যাবে।
এবার ধরা যাক, কোনোভাবে এই বুদবুদ শরীরের সেই অঙ্গগুলোতে পৌঁছলো যেখানে এক মিনিটের জন্যে রক্ত না গেলে প্রাণ সংশয় হতে পারে। যেমন ধরা যাক, মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড বা কিডনি। যেহেতু এই সমস্ত অঙ্গগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল তাই এগুলোতে Air বা Gas Embolism হলে মানুষের মৃত্যু ঘটতেই পারে।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, মস্তিষ্কের রক্তসংহনতন্ত্রের মধ্যে দুই-তিন মিলিলিটার আকারের হাওয়ার বুদবুদ প্রাণঘাতি হতে পারে। ফুসফুসীয় শিরাতে 0.৫ থেকে এক মিলি মিললিটার আকারের হাওয়ার বুদবুদ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে, যেটা মৃত্যুর কারণ ও হতে পারে।
বুদবুদের আকারের ধারণা দেওয়ার জন্যে উপরে একটি অতি প্রচলিত ৩ মিলিলিটার সিরিঞ্জের ছবি দেওয়া হলো।
সমীক্ষায় দেখা গেছে শতকরা ৫৭ ভাগ হাড়ের সার্জন (Orthopedic surgeon) ছোটো বা বড়ো Air Embolism এর ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। যারা স্কুবা ডাইভিং করে থাকেন, তাদের মধ্যে এই Air বা Gas Embolism এর ঘটনা সব থেকে বেশি লক্ষ্য করা যায়।
এই ধরণের আরও অনেক কিছু জানতে পড়তে থাকুন আমাদের ব্লগ সহজ পাঠ ।
কুলম্বের সূত্র (Coulomb's law)
i) দুটি স্থির বিন্দু আধানের মধ্যে কার্যকর আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল আধানদ্বয়ের পরিমাণের গুণফলের সমানুপাতিক এবং
ii) তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক।
F ∝ q1q2 এবং F ∝ 1/r2 অর্থাৎ F ∝ q1q2/r2,
গাণিতিক ভাবে,
স্থির তড়িৎ ও চল তড়িৎ। তড়িৎ আধানের একক ও মাত্রা।
তড়িদাধান (Electric charge)
দুটি বস্তুর মধ্যে ঘর্ষণে বস্তু দুটিতে তড়িতের সঞ্চার হয় এবং যখনই কোনাে বস্তুতে তড়িতের সঞ্চার ঘটে, তখন বলা হয় যে, বস্তুটি তড়িদাহিত হয়েছে।
তড়িৎ দুই ধরনের, যথা
(i) স্থির তড়িৎ (Static electricity) এবং
(ii) চলতড়িৎ (Current electricity)।
যে তড়িৎ উৎপত্তিস্থলেই স্থির অবস্থায় আবদ্ধ থাকে এবং সেই স্থান থেকে অন্যত্র যেতে পারে না তাকে বলা হয় স্থির তড়িৎ এবং যে তড়িৎ পরিবাহীর মধ্য দিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে তাকে বলা হয় চল তড়িৎ।
যে ভৌত ধর্মের জন্য কোনাে বস্তু কণাকে একটি তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে কণাটি একটি বল অনুভব করে তাকেই তড়িদাধান বলে। তড়িদাধান দুই প্রকার হয়- (i) ধনাত্মক ও (ii) ঋণাত্মক।
যে-কোনাে বস্তুর আহিতকরণের ব্যাখ্যা করা যায় ইলেকট্রনের আধিক্য বা ঘাটতির সাহায্যে। দুটি বস্তুর মধ্যে ঘর্ষণের ফলে একটি বস্তু থেকে অন্যটিতে ইলেকট্রনের স্থানান্তর ঘটে। যে বস্তুটি ইলেকট্রন হারায় সেই বস্তুটি ধনাত্মক আধান গ্রস্ত হয়। যে বস্তুটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে সেটি ঋণাত্মক আধানগ্রস্ত হয়।
আধানের মাত্রা ও এককঃ
1 C = 3 x 109 esu বা স্ট্যাটকুলম্ব
তড়িৎ আধান কী ধরণের রাশিঃ স্কেলার রাশি
তড়িৎচালক বল (electromotive force) বা EMF।
তড়িচ্চালক বল এবং তড়িৎচালক বলের উৎস হিসেবে তড়িৎ কোষ (Electromotive force and electric cell as a source of EMF)।
কোনাে স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে হলে যেমন বল প্রয়ােগ করতে হয়, তেমনই কোনাে পরিবাহীতে তড়িৎ প্রবাহমাত্রা সৃষ্টি করার জন্য বা প্রবাহ বজায় রাখার জন্য একটি বলের প্রয়ােজনীয়তার কথা ভাবা যায়। একেই বলা হয় তড়িৎচালক বল (electromotive force) বা সংক্ষেপে EMF।
একথা মনে রাখা আবশ্যক যে, ভিন্ন বিভবযুক্ত দুটি বস্তুকে একটি পরিবাহী দ্বারা যুক্ত করলে উচ্চ বিভবযুক্ত বস্তু থেকে নিম্ন বিভবযুক্ত বস্তুতে ধনাত্মক আধান প্রবাহিত হয়ে তড়িৎ প্রবাহমাত্রার সৃষ্টি করবে। সুতরাং, বিভব পার্থক্যের কারণে তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়। কাজেই তড়িচ্চালক বল কে নিম্নলিখিতভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়—
তড়িৎচালক বলের সংজ্ঞাঃ যার প্রভাবে বা যে কারণে তড়িৎ বর্তনীর কোনাে অংশে রাসায়নিক শক্তি বা অন্য কোনাে প্রকার শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি করে তাকে বলা হয় তড়িচ্চালক বল (EMF)।
তড়িচ্চালক বলের এককঃ তড়িচ্চালক বলের SI এবং ব্যবহারিক একক ভােল্ট(Volt)।
তড়িচ্চালক বল কোন ধরনের রাশিঃ এটি একটি স্কেলার রাশি।
তড়িচ্চালক বলের মাত্রাঃ তড়িৎচালক বলকে গাণিতিক ভাবে SI পদ্ধতিতে জুল/কুলম্ব বলা যেতে পারে। অর্থাৎ তড়িৎচালক বলের মাত্রা হবে [কার্যের মাত্রা]/[আধাানের মাত্রা] = [ML2T-2]/[IT]=[ML2T-3I-1]
তড়িৎচালক বলের উৎসঃ তড়িৎচালক বলের উৎস হল এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে কোনাে না কোনাে প্রকার শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। ডায়নামাে, তাপযুগ্ম, তড়িৎ কোশ, আলোক-তড়িৎ কোশ প্রভৃতি হল তড়িচ্চালক বলের উৎস।
তড়িচ্চালক বল মাপার যন্ত্রঃ পোটেনশিওমিটার ।
কার্য করার জন্য প্রয়ােজনীয় শক্তির উৎস হিসেবে তড়িৎকোশঃ
সচল যন্ত্রাংশবিহীন তড়িৎ উৎসই হল তড়িৎকোশ। তড়িৎকোশ রাসায়নিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে বর্তনীতে স্থায়ী তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টি করে।
বিচ্ছিন্ন বা মুক্ত অবস্থায় কোনাে তড়িৎকোশের তড়িদ্দার দুটির মধ্যে যে বিভবপার্থক্যের সৃষ্টি হয় তাকেই বলা হয় কোশটির তড়িৎচ্চালক বল। একটি সরল ভােল্টীয় কোশের তড়িৎচালক বলের মান হয় 1.08 ভােল্ট,একটি নির্জল কোশ (Dry cell)-এর তড়িৎচালক বলের মান হয় 1.5 ভােল্ট।
কোনাে কোষের তড়িচ্চালক বল 1.5 ভোল্ট বলতে বােঝায় যে, কোষের ধনাত্মক মেরু থেকে ঋণাত্মক মেরুতে 1 কুলম্ব তড়িদাধান নিয়ে যেতে কৃতকার্যের পরিমাণ হয় 1.5 জুল।
গ্রিনহাউস প্রভাব বা এফেক্ট
বায়ুমণ্ডলে মূলত CO2-এর ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনাকে বলে গ্রিনহাউস প্রভাব বা এফেক্ট।
ব্যাখ্যাঃ গ্রিনহাউস প্রভাব বা এফেক্ট হল পরিবেশকে দূষিত করার একটি অন্যতম পদ্ধতি। ইংরেজি গ্রিনহাউস শব্দটির অর্থ হল গাছপালা পরিচর্যার জন্য কাচের ঘর। এই কাচের ঘরের মধ্যে দিয়ে সুর্যের আলাে যেমন ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আকারে অবাধে প্রবেশ করে এবং ওই ঘরের তাপমাত্রা বাড়ায় তেমনই পৃথিবীকে বিশাল কাচের ঘরের মতাে বা গ্রিনহাউসের মতাে ঘিরে রয়েছে বায়ুমণ্ডল। সৌরশক্তি এই বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের ভিতর দিয়ে ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছায় এবং পুনরায় বৃহৎ তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অবলোহিত রশ্মি (infrared ray) রূপে মহাশূনে ফিরে যাওয়ার সময় কিছু তাপশক্তি আবদ্ধ হয়। ফলে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
গ্রিনহাউস গ্যাসঃ বায়ুমণ্ডলে যে সমস্ত গ্যাসের উপস্থিতির জন্য গ্রিনহাউস ক্রিয়া সংঘটিত হয় তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস বলে।
যেমন CO2 (প্রধান), জলীয় বাষ্প, মিথেন, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন, নাইট্রাস অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টি করে। গবেষণায় দেখা গেছে বড়াে বড়াে শহর যেমন—
দিল্লি, মুম্বই, কলকাতায় অরণ্য নিধনের ফলে অতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যান চলাচলে CO-এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানকার উষ্ণতা 4°C থেকে 6°C বেড়েছে। মনে রাখবে O2 এবং N2 গ্রিনহাউস গ্যাস নয়।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধিঃ গ্রিনহাউসের প্রভাবে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে বেড়ে চলেছে। যেমন— 1850 থেকে 1900 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে 0.5°C।
আবার, 1900 থেকে 2000 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তাপমাত্রা বেড়েছে 1°C। সুতরাং, প্রাকৃতিক পরিবেশ যে ক্রমশ গরম হয়ে উঠেছে সে বিষয়ে কোনাে সন্দেহ নেই। সারা পৃথিবী জুড়ে উষ্ণতার ক্রমবর্ধমান অবস্থাকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বলে।
গ্রিনহাউস প্রভাব ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলাফলঃ
গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসে কার্যকারী এবং দৈনন্দিন জীবনে রূপায়িত করা সম্ভব এমন কিছু উপায়ঃ
রাসায়নিক গণনাঃ কোনাে রাসায়নিক সংকেত বা রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমীকরণ থেকে বিভিন্ন পদার্থের ভর, আয়তন, বাষ্প ঘনত্ব ইত্যাদি নির্ণয় করাকে রাসায়নিক গণনা বলে।
রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমীকরণ (Stoichiometric Equations)
বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের পরমাণু সংখ্যার সমতা বজায় রেখে চিহ্ন ও সংকেতের সাহায্যে কোনাে রাসায়নিক বিক্রিয়ার সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে রাসায়নিক সমীকরণ বলে।
উদাহরণঃ হাইড্রোজেন এবং ক্লোরিনের বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়। এখানে বিক্রিয়ক হল হাইড্রোজেন ও ক্লোরিন এবং বিক্রিয়াজাত পদার্থ হল হাইড্রোজেন ক্লোরাইড। বিক্রিয়াটির রাসায়নিক সমীকরণ হল H2 + Cl2= 2HCl
রাসায়নিক সমীকরণের তাৎপর্যঃ রাসায়নিক সমীকরণ থেকে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি জানা যায়।
গুণগত তথ্যঃ রাসায়নিক সমীকরণের গুণগত তথ্য হিসেবে জানা যায় -
1) বিকারক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের সংকেত ও নাম।
2) বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পদার্থগুলো উপস্থিত মৌলের নাম ও চিহ্ন। 3 বিকারক ও বিক্রিয়ক পদার্থের আণবিক সংযুক্তি।
পরিমাণগত তথ্যঃ পরিমাণগত তথ্য হিসেবে রাসায়নিক সমীকরণ থেকে জানা যায়ঃ
1) বিক্রিয়ক ও উৎপন্ন পদার্থের অণু ও পরমাণুর সংখ্যা।
2) বিকারক ও উৎপন্ন পদার্থসমূহের ওজন ও তাদের অনুপাত।
3) বিক্রিয়ক ও উৎপন্ন পদার্থ গ্যাসীয় হলে সমচাপ ও উয়তায় এদের আয়তনগত অনুপাত।
4) বিক্রিয়ক ও উৎপন্ন পদার্থের ভরের সমতা সাপেক্ষে ভর সংরক্ষণ সূত্রের সত্যতা।
উদাহরণঃ 2H2 + O2=2H2O এই সমীকরণ থেকে আমরা যে যে তথ্য পাই সেগুলি নীচে দেওয়া হলঃ
গুণগত তথ্যঃ
1) বিকারকের নাম হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এবং তাদের সংকেত যথাক্রমে H2 ও O2। বিক্রিয়াজাত পদার্থ হল জল ও তার সংকেত H2O।
2) হাইড্রোজেনের চিহ্ন হল H এবং অক্সিজেনের চিহ্ন হল O।
3) জল হল হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন মৌলের একটি যৌগিক পদার্থ।
পরিমাণগত তথ্যঃ
1) 2-অণু হাইড্রোজেন এবং 1 -অণু অক্সিজেনের পারস্পরিক বিক্রিয়ায় 2-অণু জল গঠিত হয়। 4-পরমাণু হাইড্রোজেন এবং 2-পরমাণু অক্সিজেন, মােট 6টি পরমাণু দিয়ে 2-অণু জল সৃষ্টি হয়।
2)
2H2 + O2 = 2H2O
2x2x1= 4 + 2x16=32 = 2(2x1+16)=32
4 ভাগ ওজনের হাইড্রোজেন 32 ভাগ ওজনের অক্সিজেনের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে 36 ভাগ জল উৎপন্ন করে।H2, O2 H2O-এর ওজনগত অনুপাত হল 4: 32:36 বা 1: 8:9 ।
3) গ্যাসীয় অবস্থায় হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন যুক্ত হয়ে স্টিম উৎপন্ন করলে যদি প্রত্যেকটির আয়তন উষ্ণতা ও চাপে নির্ণীত হয়, তবে তাদের আয়তনগত অনুপাত হয় 2 : 1 : 2।
4) 4 ভাগ ভরের H এবং 32 ভাগ ভরের O অর্থাৎ মােট 36 ভাগ ভরের বিক্রিয়ক উৎপন্ন করে 36 ভাগ ভরের জল অর্থাৎ বিক্রিয়াজাত পদার্থ। উভয়পক্ষে মােট ভরের পরিমাণ সমান হওয়ায় নিশ্চিতরূপে জানা গেল যে, ভরের সংরক্ষণ সূত্র মান্য হয়।
কেরোসিন বা কয়লা পুড়তে অক্সিজেন চাই। কিন্তু খােলা হাওয়ায় কেরােসিন বা কয়লা কি নিজে নিজ জ্বলে ওঠে?
রাসায়নিক বিক্রিয়ার অন্যতম প্রয়ােজনীয় প্রভাবক হল তাপ। কেরোসিন বা কয়লার দহনের জন্য প্রয়ােজনীয় উষ্ণতা খােলা হাওয়ায় থাকে না, তাই উপযুক্ত তাপের অভাবে এই সকল দাহ্য পদার্থ নিজে নিজে জ্বলে ওঠে না।
রাসায়নিক বিক্রিয়াকে একটি পারমাণবিক ঘটনা বলা হয় কেন?
উত্তর।
রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরমাণু অংশগ্রহণ করে। বিক্রিয়ায় সম্পূর্ণ নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থের অণু গঠিত হলেও বিক্রিয়ায় অংশ গ্রহণকারী পদার্থের পরমাণুর সংখ্যা ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের পরমাণুসংখ্যা সর্বদা সমান থাকে। বিক্রিয়ার আগে ও পরে মােট ভর সমান থাকে। তাই বলা যায়, রাসায়নিক বিক্রিয়া একটি পারমাণবিক ঘটনা।
তড়িৎ প্রবাহমাত্রা (Electric Current)
তড়িৎচালক বলের প্রভাবে কোনাে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে রক্ত ইলেকট্রনের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহই হল তড়িৎপ্রবাহ। প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী ধনাত্মক আধানের প্রবাহের অভিমুখ কি তড়িৎ প্রবাহমাত্রার অভিমুখ ধরা হয়। কাজেই পরিবাহীর মুক্ত ইলেকট্রনের প্রবাহ যে অভিমুখে ঘটে তড়িৎ প্রবাহ মাত্রার অভিমুখ তার বিপরীত দিকে ধরা হয়।
![]() |
তড়িৎ প্রবাহমাত্রা |
তড়িৎ প্রবাহমাত্রাঃ
পরিবাহীর যে-কোনাে প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ ধনাত্মক আধান প্রবাহিত হয় তাকে ওই পরিবাহীর প্রবাহমাত্রা বলা হয়।
পরিবাহীর কোনাে প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে যদি t সেকেন্ড সময়ে Q পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয় তবে ওই পরিবাহীর প্রবাহমাত্রা হয় I = Q/t অর্থাৎ, প্রবাহমাত্রা = আধান/সময়
রাশিঃ তড়িৎ প্রবাহমাত্রার শুধু মান আছে, তাই এটি একটি স্কেলার রাশি।
তড়িৎ প্রবাহমাত্রার এককঃ তড়িৎ প্রবাহমাত্রা CGS একক হল emu (Electromagnetic unit) এবং SI পদ্ধতিতে ব্যবহারিক একক হল অ্যাম্পিয়ার (A)।
কোনাে পরিবাহীর যে-কোনাে প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে 1 সেকেন্ডে 1 কুলম্ব আধান প্রবাহিত হলে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা হয় 1 অ্যাম্পিয়ার (A)।
1 emu প্রবাহমাত্রা = 10 A প্রবাহমাত্রা
তড়িৎ প্রবাহ দুই ধরনের হয়, যেমন-
1) সমপ্রবাহ(Direct current or DC) এবং
2) পরবর্তী প্রবাহ(Alternating Current or AC)
1) সমপ্রবাহঃ এই ধরনের তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ সবসময় একই দিকে হয়।
তড়িৎকোশ সমপ্রবাহ সৃষ্টি করতে পারে।
2) পরিবর্তী প্রবাহঃ এই ধরনের তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখ একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিপরীত দিকে পরিবর্তিত হয়।
AC ডায়নামোর সাহায্যে পরিবর্তী তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি করা যায়।
অনুঘটক (Catalyst) : যেসব রাসায়নিক পদার্থ কোনাে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় স্বল্প পরিমাণে উপস্থিত থেকে বিক্রিয়ার বেগকে ত্বরান্বিত করে, কিন্তু বিক্রিয়া শেষে নিজে ভর ও ধর্মে অপরিবর্তিত থাকে, সেইসব পদার্থকে অনুঘটক বলে। কেন O2 প্রস্তুতিতে ম্যাঙ্গানিজ ডাই অক্সাইড, H2SO4 প্রস্তুতিতে ভ্যানাডিয়াম পেন্টক্সাইড ইত্যাদি।
উদাহরণঃ পরীক্ষাগারে শুধুমাত্র পটাশিয়াম ক্লোরেটকে প্রায় ৬৩০°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে, এটি খুব ধীরে ধীরে বিয়ােজিত হয়ে পটাশিয়াম ক্লোরাইড ও অল্প পরিমাণ অক্সিজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। এভাবে অতি উচ্চ তাপমাত্রায় অক্সিজেন উৎপাদনের সময়ে বিস্ফোরণ ঘটার সম্ভাবনা থাকে এবং উৎপন্ন অক্সিজেনের পরিমাণ ও তুলনামূলক ভাবে কম হয়। তাছাড়া ৬৩০°C তাপমাত্রা সৃষ্টি করতে যে পরিমাণ জ্বালানি ব্যবহার হয়, তা অর্থনৈতিক নয়।
দেখা গেছে , পরীক্ষাগারে ৪ ভাগ ওজনের পটাশিয়াম ক্লোরেটের সঙ্গে ১ ভাগ ওজনের ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড মিশিয়ে দিলে খুব কম তাপমাত্রায় (২৩০°C-২৫০°C) অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। এই বিক্রিয়ায় ম্যাঙ্গানিজ ডাই অক্সাইড এর ভর ও ধর্ম অপরিবর্তিত থাকে, শুধুমাত্র বিক্রিয়ার বেগ বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ, অক্সিজেন প্রস্তুতির এই বিক্রিয়ায় ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড অনুঘটকের কাজ করে।
2KClO3+[MnO2,230°-250°C] = 2KCI +3O2(গ্যাস)+[MnO2]
অনুঘটকের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী জানতে এখানে ক্লিক করুন।
উত্তরঃ
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অনুঘটক সামান্য পরিমাণে উপস্থিত থেকে বিক্রিয়ার গতিকে ত্বরান্বিত করে, কিন্তু বিক্রিয়া শেষে নিজে অপরিবর্তিত থাকে, সেই বিক্রিয়াকে অনুঘটন বলে।
অনুঘটকের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
অনুঘটকের বৈশিষ্ট্যগুলি হল :
রাসায়নিক বিক্রিয়া কাকে বলে? বিক্রিয়া ও বিক্রিয়াজাত পদার্থ বলতে কী বোঝায়? একটি উদাহরণের সাহায্যে বুঝিয়ে দাও।
রাসায়নিক বিক্রিয়া (Chemical Reaction) : যে প্রক্রিয়ায় কোন পদার্থ বিয়োজিত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্ম বিশিষ্ট। এক বা একাধিক পদার্থ উৎপন্ন করে বা একাধিক পদার্থ পরম্পর। যুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্মবিশিষ্ট এক বা একাধিক পদার্থ গঠন করে, সেই প্রক্রিয়াকে বলা হয় রাসায়নিক বিক্রিয়া।
বিক্রিয়ক (Reactant) : রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যেসব পদার্থ অংশগ্রহণ করে এবং যেসব পদার্থের অণুর রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্মের অন্য পদার্থ উৎপন্ন হয়, তাকে বিক্রিয়ক বলে।
বিক্রিয়াজাত পদার্থ (Product) : রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এক বা একাধিক বিক্রিয়ক পরস্পর বিক্রিয়া করে যে ভিন্ন ধর্মবিশিষ্ট নতুন পদার্থ উৎপন্ন করে, তাকে বিক্রিয়াজাত পদার্থ বলে।
নীচে একটি উদাহরণের সাহায্যে বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থ বােঝানাে হলঃ
N2 (গ্যাস) + 3H2(গ্যাস) = 2NH3 (গ্যাস)
নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেনের বিক্রিয়ায় অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয়।
এখানে নাইট্রোজেন (N2) ও হাইড্রোজেন (H2) হল বিক্রিয়ক কারণ- এরা পরস্পর রাসায়নিক বিক্রিয়া করে নতুন পদার্থ অ্যামোনিয়া উৎপন্ন করেছে। সুতরাং, অ্যামোনিয়া (NH3) হল বিক্রিয়াজাত পদার্থ। এক্ষেত্রে, বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থ গুলি গ্যাসীয়।
রাসায়নিক বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
উত্তর।
রাসায়নিক বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি হল :
যথেষ্ট জল, বাতাসের কার্বন ডাইঅক্সাইড, মাটির খনিজ সব পেলেও কি একটা টবের গাছ অন্ধকারে খাদ্য তৈরি করতে পারবে?
উত্তর।
গাছের খাদ্য তৈরি করতে পর্যাপ্ত জল, বায়ুর কার্বন ডাই-অক্সাইড, মাটির খনিজ উপাদান ছাড়াও দরকার হয় সূর্যালোকের। সূর্যালােকের উপস্থিতিতে গাছ ক্লোরোফিলের সাহায্যে পাতায় শর্করাজাতীয় খাদ্য উৎপন্ন করে। টবের গাছকে তাই অন্ধকারে রেখে দিলে উপযুক্ত আলাের অভাবে খাদ্য তৈরি করতে পারবে না।
ভৌতরাশি কাকে বলে?
ভৌতরাশির সংজ্ঞাঃ বস্তু বা বস্তুর উপাদান সম্পর্কিত যেকোনো পরিমেয় ধর্মই হলো ভৌতরাশি।
উদাহরণঃ দৈর্ঘ্য, ভর, যেহেতু পরিমাপযোগ্য, তাই তারা প্রত্যেকে একেকটা ভৌতরাশি। বিজ্ঞানে দৈর্ঘ্য, ভর ও সময় ছাড়াও অসংখ্য ভৌতরাশি আছে। ক্ষেত্রফল, আয়তন, বেগ, বল, ভরবেগ, কার্য ইত্যাদি এরূপ কয়েকটি ভৌতরাশি।
উত্তর: এটি একপ্রকার সংকর জাতের মুরগি। করনিস জাতের পুরুষ মুরগির সঙ্গে সাদা প্লিমাউথ রক জাতের স্ত্রী মুরগির মিলনে ব্রয়লার মুরগি তৈরি করা হয়...