উত্তরঃ
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অনুঘটক সামান্য পরিমাণে উপস্থিত থেকে বিক্রিয়ার গতিকে ত্বরান্বিত করে, কিন্তু বিক্রিয়া শেষে নিজে অপরিবর্তিত থাকে, সেই বিক্রিয়াকে অনুঘটন বলে।
অনুঘটকের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
অনুঘটকের বৈশিষ্ট্যগুলি হল :
- অনুঘটক রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার পর বিক্রিয়া শেষে নিজে অপরিবর্তিত থাকে।
- অনুঘটক বিক্রিয়ার বেগ বাড়াতে-কমাতে পারে।
- কোনাে বিক্রিয়ায় এদের উপযােগিতা পরীক্ষার সাহায্যে নির্ণয় করতে হয়, বিক্রিয়ার সমীকরণ দেখলেই বলা যায় না।
- এরা কোনাে বিক্রিয়াকে শুরু বা শেষ করতে পারে না।
- বিক্রিয়ক পদার্থগুলির তুলনায় প্রয়ােজনীয় অনুঘটকের পরিমাণ খুব কম হয়।
- রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কঠিন অনুঘটকের সূক্ষ্ম গুঁড়ো ব্যবহৃত হয় বলে অনুঘটকের ক্ষেত্রফল বাড়ে, ফলে অনুঘটকের কার্যকারিতা বাড়ে।
- সাধারণত একটি নির্দিষ্ট বিক্রিয়াকে একটি নির্দিষ্ট অনুঘটক প্রভাবিত করে, ভিন্ন ভিন্ন বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন অনুঘটকের দরকার হয়।
রাসায়নিক বিক্রিয়া কাকে বলে? বিক্রিয়া ও বিক্রিয়াজাত পদার্থ বলতে কী বোঝায়? একটি উদাহরণের সাহায্যে বুঝিয়ে দাও।
রাসায়নিক বিক্রিয়া (Chemical Reaction) : যে প্রক্রিয়ায় কোন পদার্থ বিয়োজিত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্ম বিশিষ্ট। এক বা একাধিক পদার্থ উৎপন্ন করে বা একাধিক পদার্থ পরম্পর। যুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্মবিশিষ্ট এক বা একাধিক পদার্থ গঠন করে, সেই প্রক্রিয়াকে বলা হয় রাসায়নিক বিক্রিয়া।
বিক্রিয়ক (Reactant) : রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যেসব পদার্থ অংশগ্রহণ করে এবং যেসব পদার্থের অণুর রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্মের অন্য পদার্থ উৎপন্ন হয়, তাকে বিক্রিয়ক বলে।
বিক্রিয়াজাত পদার্থ (Product) : রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এক বা একাধিক বিক্রিয়ক পরস্পর বিক্রিয়া করে যে ভিন্ন ধর্মবিশিষ্ট নতুন পদার্থ উৎপন্ন করে, তাকে বিক্রিয়াজাত পদার্থ বলে।
নীচে একটি উদাহরণের সাহায্যে বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থ বােঝানাে হলঃ
N2 (গ্যাস) + 3H2(গ্যাস) = 2NH3 (গ্যাস)
নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেনের বিক্রিয়ায় অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয়।
এখানে নাইট্রোজেন (N2) ও হাইড্রোজেন (H2) হল বিক্রিয়ক কারণ- এরা পরস্পর রাসায়নিক বিক্রিয়া করে নতুন পদার্থ অ্যামোনিয়া উৎপন্ন করেছে। সুতরাং, অ্যামোনিয়া (NH3) হল বিক্রিয়াজাত পদার্থ। এক্ষেত্রে, বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থ গুলি গ্যাসীয়।
রাসায়নিক বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
উত্তর।
রাসায়নিক বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি হল :
- রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক পদার্থের সমস্ত ধর্ম লােপ পেয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্ম বিশিষ্ট পদার্থ উৎপন্ন হয়।
- একধরনের পদার্থ অন্য ধরনের পদার্থে পরিণত হলে মােট ভর অপরিবর্তিত থাকে। এটা ভরের নিত্যতা সূত্র।
- বিক্রিয়ক পদার্থ এবং বিক্রিয়াজাত পদার্থের মােট পরমাণু সংখ্যা সর্বদা নির্দিষ্ট থাকে।
- বিক্রিয়ক পদার্থগুলি নির্দিষ্ট ওজন অনুপাতে পরস্পর যুক্ত হয়ে বিক্রিয়াজাত পদার্থ উৎপন্ন করে।
- বিক্রিয়ক পদার্থের অণুর গঠন বিক্রিয়াজাত পদার্থের অণুর গঠনের থেকে পৃথক হয়।
- বিক্রিয়ক পদার্থের স্থায়ী পরিবর্তন ঘটে।
- প্রক্রিয়ায় তাপের উদ্ভব বা শােষণ হবেই।
- রাসায়নিক বিক্রিয়া চলাকালীন বর্ণ পরিবর্তন, গ্যাস নির্গমন, অধঃক্ষেপণ, তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটতে পারে।
- এটি একটি পারমাণবিক ঘটনা যাতে পরমাণু গুলি অংশগ্রহণ করে।
- রাসায়নিক বিক্রিয়া আলো, চাপ, তাপ, তড়িৎ, দ্রাবক ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত হয়।
যথেষ্ট জল, বাতাসের কার্বন ডাইঅক্সাইড, মাটির খনিজ সব পেলেও কি একটা টবের গাছ অন্ধকারে খাদ্য তৈরি করতে পারবে?
উত্তর।
গাছের খাদ্য তৈরি করতে পর্যাপ্ত জল, বায়ুর কার্বন ডাই-অক্সাইড, মাটির খনিজ উপাদান ছাড়াও দরকার হয় সূর্যালোকের। সূর্যালােকের উপস্থিতিতে গাছ ক্লোরোফিলের সাহায্যে পাতায় শর্করাজাতীয় খাদ্য উৎপন্ন করে। টবের গাছকে তাই অন্ধকারে রেখে দিলে উপযুক্ত আলাের অভাবে খাদ্য তৈরি করতে পারবে না।
ভৌতরাশি কাকে বলে?
ভৌতরাশির সংজ্ঞাঃ বস্তু বা বস্তুর উপাদান সম্পর্কিত যেকোনো পরিমেয় ধর্মই হলো ভৌতরাশি।
উদাহরণঃ দৈর্ঘ্য, ভর, যেহেতু পরিমাপযোগ্য, তাই তারা প্রত্যেকে একেকটা ভৌতরাশি। বিজ্ঞানে দৈর্ঘ্য, ভর ও সময় ছাড়াও অসংখ্য ভৌতরাশি আছে। ক্ষেত্রফল, আয়তন, বেগ, বল, ভরবেগ, কার্য ইত্যাদি এরূপ কয়েকটি ভৌতরাশি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন