"চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা" বলে গেছেন জীবনানন্দ দাশ, তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ 'বনলতা'য়। আজকে তার কথা বলবো না। আজকে বলবো ফেরিওয়ালারা কেন চুল কিনে নিয়ে যায়। এই কেনা চুল কোন কোম্পানি কিনে নেয়, কেনই বা কিনে নেয়? ছেঁড়া চুল দিয়ে কী কী তৈরী হতে পারে। আমরা এক এক করে দেখে নেবো আজকের আলোচনায়।
মাথার চুল অনেক কাজে লাগে। কিছু কিছু ব্যবহার একদম কাল্পনার বাইরে।
- মাথার চুলের যে ব্যবহার প্রথমেই মাথায় আসে সেটা হল পরচুলা বা Wig বানানো। সিনেমা থিয়েটার এমনকি চুল ঝরা সমস্যার সাথে লড়াই করতে পরচুলার ব্যবহার অনস্বীকার্য।
- কস্মেটিক্স বা মেইকআপ শিল্পেও এই চুল প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোনো প্রোডাক্ট তৈরী হওয়ার পরে তার টেস্টিং করার জন্যে সত্যিকারের চুলের দরকার হয়ে পড়ে। ১০০ গ্রাম চুলের দাম কোয়ালিটি অনুসারে দুই হাজার থেকে দশ হাজারের বেশি পর্যন্ত হতে পারে।
- SmartGrow নামের একটা কোম্পানি গার্ডেনিং প্রোডাক্ট তৈরী করার জন্যে ভারত ও চীন থেকে মানুষের চুল আমদানি করে। চুল দিয়ে বিনুনি করে এক জাতীয় ম্যাট তৈরী করা হয় যেটা গাছের মূলকে পোকার হাত থেকে রক্ষা করে এবং সাথে সাথে সারের কাজ করে।
- প্রায় দুই দশক আগে থেকে নাসা এবং কয়েকটি সংস্থা মানুষের চুল নিয়ে গবেষণা করছে, উপচে পড়া তেল মোছার কাজে ব্যবহার করার জন্যে। বলা হয়, মানুষের চুল এটির ওজনের নয় থেকে দশ গুণ তেল শোষণ করে নিতে পারে।
- ড্রেস ডিজাইনকারীরা নতুন ড্রেস ডিজাইন করার জন্যে চুল নিয়েও এক্সপেরিমেন্ট করে থাকেন।
- এটি একদম আশ্চর্যের ব্যাপার। 2004 সালের আসে পাশে একটি কোম্পানি দাবি করেন যে তারা চুল দিয়ে সোয়া সস ( Soya Sauce) তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে। চুলের গঠনমূলক উপাদান হলো, কেরাটিন প্রোটিন। বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সেই প্রোটিন থেকে অ্যামাইনো অ্যাসিড তৈরী করা যেতেই পারে। কিন্তু স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বিষয়টি ভালো চোখে দেখেন নি।
এছাড়াও মেইক আপ ব্রাশ, কৃত্রিম আই লাশ, পেইন্ট ব্রাশ ইত্যাদি তৈরী করতে মানুষের মাথার চুল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন