ছোটো উত্তর : কথাটা যতোটা সত্য ততটাই মিথ্যে।
বড় উত্তর :
পৃথিবীর সব থেকে কঠিন মৌলিক পদার্থের নাম কি জানেন? হীরে বা হীরা। চুম্বন তো দূরের কথা, হীরে চুষে চুষে আপনার প্রাণ পাখি বেরিয়ে যেতে পারে কিন্তু হীরের একটা অণু বা পরমাণু আপনি সেখান থেকে বের করতে পারবেন না।
আরেকটু উদাহরণ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করি। হাইড্রোক্লোরিক/সালফিউরিক এসিডের 50 শতাংশ দ্রবণ মানুষের হাত পুড়িয়ে দিতে পারে, মুহূর্তের মধ্যে। কিন্তু এই এসিডের 100 শতাংশের দ্রবণে হীরে ডুবিয়ে রাখলেও হীরের গায়ে দাগ কাটতে পারে না। সাধারন ঘরের তাপ ও চাপে হীরা কোনো রাসায়নিকের সাথে বিক্রিয়া করে না। এমনকী, একটা হীরা কাটার জন্যে আরেকটা শক্ত হীরা ব্যবহার করা হয়।
তবে, আগেকার মুভি বা গল্পের বইয়ে কেন দেখাতো, হীরের আংটি চুম্বন করলে মানুষ মারা যায়। আসলে, সেখানে অর্ধসত্য বলা হয়। আগেকার দিনে গুপ্তচর বা রাজা বা রানীরা হীরার বা সাধারণ আংটির মধ্যে খুবই বিষাক্ত বিষ লুকিয়ে রাখতেন।
বিষ রাখার জন্যে এর থেকে ভালো জায়গা আর কী হতে পারে বলুন। ধরুন কোনো গুপ্তচর ফাঁদে পড়ে গেলো, চারিদিক ঘিরে নেওয়া হয়েছে। গুপ্তচর বৃত্তির সাজা কিন্তু খুব কঠিন হতো। তাই তারা ধরা পড়ার আগেই হাতের আংটি চুম্বন করে নিতো, খুব তাড়াতাড়ি। শরীরের অন্য অংশে বিষ লুকিয়ে রাখা ও প্রয়োজনে তার ব্যবহার করা খুব দুঃসাধ্যের।
একইভাবে রাজা বা রানীরা অন্য রাজার হাতে বন্দি হওয়ার আগে, আত্মসম্মান রক্ষার জন্যে, আংটি চুম্বন করে আত্মহত্যা করতেন।
যেহেতু অধিকাংশ মুভি বা গল্পে এইরকম দৃশ্যে রাজা বা রানীকে আংটি চুম্বন করে মরতে দেখা যেতো, সাধারণ মানুষের মনে হতো, হীরার আংটি চুম্বন করে মরলেন, রাজা বা রানী(রাজা বা রানীর হাতের আংটি হীরার হবে, এমন চিন্তা মাথায় আসা নিরর্থক নয়)।
তবে প্রাচীন কালে অনেকে দাঁতের মাঝে বা জামা/পোশাকের কলারের কোনায় বিশেষ "থলির" সাহায্যে বিষ লুকিয়ে রাখতেন। শোনা যায় পটাশিয়াম সায়ানাইড রাখা হতো, যেটা খেলে মানুষ মুহূর্তের মধ্যে মারা যেতে পারে।