এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১

বরফের চাঁই খোলা অবস্থায় রাখলে তা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায় কেন?

উত্তর।
বরফের চাঁই-এর সংলগ্ন বায়ুর সংস্পর্শে এসে ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয় এবং বাতাসে ভাসমান অবস্থায় থাকে। বরফের চারপাশে এই ভাসমান জলকণাগুলিকেই বরফখণ্ড থেকে নির্গত ধোঁয়া বলে মনে হয়।

তাপ সঞ্চালন কাকে বলে? কী কী পদ্ধতিতে তাপ সঞ্চালিত হয়?

উত্তর।

তাপ সঞ্চালন (Transmission of heat) : উন্নতর স্থান থেকে অপেক্ষাকৃত কম উস্ন স্থানে তাপ সঞ্চালিত হবার ঘটনাকে তাপ সঞ্চালন বলে। তাপ সঞ্চালন তিনভাবে হতে পারে, যথা—পরিবহণ, পরিচলন ও বিকিরণ।

বাতাসে ধূলিকণার উপস্থিতির সঙ্গে বৃষ্টিপাতের কোনো সম্পর্ক আছে কি?

উত্তর।
বাতাসে ধূলিকণা উপস্থিত থাকে বলেই মেঘ সৃষ্টি তথা বৃষ্টিপাত ঘটে থাকে। সূর্যের তাপে বড়ো জলাশয়, নদী, সমুদ্রের উপরিতল থেকে জল বাষ্পীভূত হয়ে বায়ুতে মিশে যায়। উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু হালকা হয়ে উপরে ওঠে এবং একসময় বায়ুর উষ্ণতা হ্রাস পেয়ে শিশিরাঙ্কের নীচে নেমে এলে ঘনীভবনের ফলে জলবিন্দুতে পরিণত হয় ও বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণাকে আশ্রয় করে ভেসে বেড়ায়। একেই মেঘ বলে। তাই ধূলিকণা বাতাসে না থাকলে মেঘের অস্তিত্ব থাকত না, ফলে বৃষ্টিও হত না।

মেঘাচ্ছন্ন আকাশ থাকলে শিশির জমে না কেন?

উত্তর।

মেঘমুক্ত আকাশ শিশির জমার পক্ষে উপযুক্ত। কারণ— মেঘের অনুপস্থিতিতে ভূপৃষ্ঠ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়। কিন্তু মেঘলা আকাশে ভূপৃষ্ঠ দ্বারা বিকীর্ণ তাপ মেঘের স্তরে প্রতিফলিত হয়ে আবার ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। ফলে, ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বাতাসের উদ্ভূতা কমে শিশিরাঙ্কের নীচে নামতে পারে না। ফলে সহজে শিশির জমে না।

ভালো শিশির পড়ার শর্ত কী?

উত্তর।

ভালো শিশির পড়ার শর্ত হল—
  1. আকাশ পরিষ্কার ও মেঘহীন থাকবে
  2. বায়ুর আর্দ্রতা বেশি হতে হবে,
  3. বাতাস স্থির থাকতে হবে,
  4. তাপের ভালো বিকিরক ও কুপরিবাহী পদার্থের সংস্পর্শে থাকা বস্তু
  5. ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বস্তুর উপস্থিতি।
জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্ক অপেক্ষা কম হলে কী হবে?

উত্তর।
জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত বায়ুর উন্নতা শিশিরাঙ্কের নীচে এলে ওই উন্নতার বায়ু আরও কম জলীয়বাষ্প ধরে রাখতে পারবে। জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণায় রূপান্তরিত হবে। ফলে শিশির, কুয়াশা ইতাদি প্রাকৃতিক ঘটনাগুলি ঘটবে।

সন্ধেবেলা শিশির পড়ে না, অথচ গভীর রাতে বা ভোরের দিকে শিশির পড়ে কেন?

উত্তর।
সারাদিন সূর্যের তাপে ভূপৃষ্ঠ গরম হয় এবং সংলগ্ন বায়ুও গরম হয়। ভূপৃষ্ঠ ঠান্ডা হতে কিছুটা সময় লাগে, সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গেই ঠান্ডা হয় না। ফলে, ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা শিশিরাঙ্কের নীচে নামে না, তাই সন্ধেবেলায় শিশির পড়ে না। গভীর রাতে বা ভোরের দিকে ভূপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়। ফলে বায়ুর উষ্ণতা একসময় শিশিরাঙ্কের নীচে নেমে যায় ও শিশির পড়ে।

শরৎকালের ভোরে খোলা আকাশের নীচে রাখা লোহা ও কাঠের চেয়ারের মধ্যে কোনটিতে প্রথম শিশির জমবে?

উত্তর।
তাপের কুপরিবাহী বস্তুর উপর শিশির দ্রুত জমে। কারণ— এক্ষেত্রে বস্তু দ্রুত তাপ গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় সংলগ্ন বায়ু সহজে শীতল হয় এবং উয়তা শিশিরাঙ্কের নীচে নেমে গেলে শিশির পড়ে। কাঠ কুপরিবাহী পদার্থ হওয়ায় কাঠের উপর প্রথম শিশির দেখা যাবে।

মেঘলা রাতে ভালো শিশির পড়ে না কেন?

উত্তর।
আকাশ মেঘলা থাকলে, ভূপৃষ্ঠ এবং ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তর থেকে বিকীর্ণ তাপ বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তর ভেদ করে যেতে পারে না, বরং বেশিরভাগ তাপই মেঘ দ্বারা প্রতিফলিত হয়। ভূপৃষ্ঠের নিকটবর্তী বায়ুস্তরের উয়তা সহজে শিশিরাঙ্কের নীচে নামতে পারে না। তাই মেঘলা রাতে ভালো শিশির পড়ে না।

বড়ো বড়ো শহরে বা শিল্পাঞ্চলে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয় কেন?

উত্তর।
বড়ো বড়ো শহরে বা শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন কলকারখানা থেকে নির্গত দূষিত বায়ুতে ধুলো ছাড়াও কার্বন, সালফার ইত্যাদির কণা থাকে। এ ছাড়া, কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়াও বায়ুতে এসে মেশে। ফলে, ওই সব অঞ্চলে কুয়াশা হলে তা ধোঁয়ার সঙ্গে মিশে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা মিলিয়ে যায় কেন?

উত্তর। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তাপে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়, ফলে ভূত্বক সংলগ্ন বায়ুর উয়তাও বাড়ে। বর্ধিত উন্নতায় বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে, জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত বায়ু পুনরায় অসম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। উত্তপ্ত বায়ু থেকে লীনতাপ সংগ্রহ করে কুয়াশা হিসেবে ভাসমান জলবিন্দুগুলি আবার বাষ্পে পরিণত হয়। তাই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা মিলিয়ে যায়৷

জেনে রাখা ভালো: উৎপত্তিগতভাবে অভিন্ন হওয়ায় মেঘ ও কুয়াশার মধ্যে কোনো মৌলিক পার্থক্য নেই। প্রাকৃতিক ঘনীভবনের ফলেই দুইয়ের উৎপত্তি। শুধুমাত্র তফাত এই যে, কুয়াশার তুলনায় মেঘ বায়ুমণ্ডলের অনেক উপরের স্তরে অবস্থান করে। প্রকৃতপক্ষে মেঘ হল ঊর্ধ্বাকাশের কুয়াশা।

তোমাকে 50°C উষ্ণতার সম্পৃক্ত নুনের দ্রবণ দেওয়া হল। তুমি ওই দ্রবণের উষ্ণতা ধীরে ধীরে কমাতে থাকলে। কী হবে বলো? 

উত্তর:সম্পৃক্ত নুনের দ্রবণের উয়তা কমাতে থাকলে ওই দ্রবণে নুনের দ্রাব্যতা কমে যাবে। ফলে, কিছুটা নুন থিতিয়ে পড়বে। তবে দ্রবণটি এই অবস্থাতেও সম্পৃক্ত থাকবে।

কোনো মহাকাশচারী 20°C উষ্ণতায় জল ফ্লাস্কে করে চাঁদের পৃষ্ঠে নিয়ে গিয়ে ওই জল একটি বিকারে ঢাললে তিনি কী দেখবেন?

উত্তর।
চাঁদে বায়ুমণ্ডলে না থাকায় সেখানে বায়ুচাপ শূন্য। বায়ুশূন্য স্থানে জলের স্ফুটনাঙ্ক তার স্বাভাবিক স্ফুটনাঙ্ক অপেক্ষা অনেক কম। তাই মহাকাশে থাকাকালীন বিকারে জল ঢালার সময় জলের উপর চাপ শুধুমাত্র 20°C উষ্মতার জলীয়বাষ্প চাপের সমান হয়, যা অতি নগণ্য। এই উপেক্ষণীয় চাপে জল দ্রুত ফুটে বাষ্পে পরিণত হতে শুরু করে এবং বাষ্পীভবনের জন্য প্রয়োজনীয় লীনতাপ বিকারের জল থেকেই সংগ্রহ করে। ফলে বিকারের অবশিষ্ট জলের উষ্ণতা দ্রুত হ্রাস পায় এবং একসময় তা বরফে পরিণত হয়।

রান্নার সময় পাত্রের মুখে ঢাকনা দিয়ে চেপে রান্না করলে খাদ্যবস্তু তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে যায় কেন?

উত্তর: পাত্রের মুখে ঢাকনা দিয়ে রাখলে তাপের ফলে উৎপন্ন জলীয়বাষ্প পাত্রের মধ্যেই জমা হয়, বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে না। আর জলীয়বাষ্প যত বাড়ে, বাষ্পচাপও তত বাড়ে। ফলে জলের স্ফুটনাঙ্কও বেড়ে যায় ও খাদ্যবস্তু তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে যায়।
যেমন : প্রেশার কুকার

একটি জলপূর্ণ বিকার টেবিলের উপর রেখে বিকারের জলে বাষ্প চালনা করলে বায়ুমণ্ডলীয় চাপে জল ফোটানো যাবে কি?

উত্তর: এক্ষেত্রে বিকারের জল, সরবরাহ করা বাষ্প থেকে তাপগ্রহণ করে নিজের উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। এভাবে যে মুহূর্তে জলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক স্ফুটনাঙ্ক অর্থাৎ, 100°C হবে তখন জল ও বাষ্প উভয়ের উষ্ণতা সমান হয়ে যাওয়ায় তাপীয় আদানপ্রদান বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে ওই জল বাষ্প থেকে আর তাপ গ্রহণ করতে পারবে না। তাই ওই জল 100°C উষ্ণতায় থেকে যাবে, ফুটবে না ৷

প্রেশার কুকারে খাদ্যবস্তু তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয় কেন?

উত্তর: চাপ বাড়ালে তরলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে-প্রেশার কুকারে এই নীতি কাজে লাগানো হয়। প্রেশার কুকারে জলসহ খাদ্যবস্তু নিয়ে ঢাকনাটি বায়ু নিরুদ্ধভাবে বন্ধ করে তাপ দেওয়া হয়। এর ফলে উৎপন্ন জলীয়বাষ্প পাত্রের মধ্যে জমা হতে থাকে ও বাষ্পচাপ ক্রমশ বাড়ে। এখন পিন ভাল্বটিকে এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে ভিতরের বাষ্পচাপ 2 বায়ুমণ্ডলীয় চাপের সমান হয়। এই চাপে জলের স্ফুটনাঙ্ক প্রায় 120°C হয়। এই উচ্চ তাপমাত্রায় ফুটন্ত জলে খাদ্যদ্রব্য তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয় ও রান্না দ্রুত হয়।

চাপ বাড়ালে স্ফুটন প্রক্রিয়া বাধা পাবে, নাকি স্ফুটন প্রক্রিয়ার সাহায্য হবে?

উত্তর।
স্ফুটনে তরল বাষ্পীভূত হয়। অর্থাৎ, আয়তনে প্রসারিত হয়। চাপ বাড়ালে আয়তন প্রসারণ বাধা পাবে। তাই চাপ বাড়ালে স্ফুটন প্রক্রিয়া বাধা পাবে এবং স্ফুটনাঙ্ক বেড়ে যাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured Post

ব্রয়লার মুরগি কীভাবে তৈরি করা হয়?

উত্তর:  এটি একপ্রকার সংকর জাতের মুরগি। করনিস জাতের পুরুষ মুরগির সঙ্গে সাদা প্লিমাউথ রক জাতের স্ত্রী মুরগির মিলনে ব্রয়লার মুরগি তৈরি করা হয়...

Popular Posts