এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ১১ জুলাই, ২০২১

পদার্থ (Matter) কাকে বলে?

উত্তর | যা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য, যাদের ভর আছে, যারা কিছুটা স্থান দখল করে, যাদের আকার পরিবর্তনে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা আছে, যারা গতিশীল বা স্থিতিশীল অবস্থার পরিবর্তন করতে চাইলে বাধা দেয়, তাকে পদার্থ বলে।

উদাহরণ: কাচ, কাঠ, জল, বায়ু প্রভৃতি।

জেনে রাখো : বস্তুর একটি নির্দিষ্ট জ্যামিতিক আকৃতি থাকে। কিন্তু পদার্থের নির্দিষ্ট কোনো আকার বা আকৃতি থাকে না। পদার্থ দিয়ে বস্তু গঠিত হয়। কাঠের চেয়ার হল বস্তু এবং কাঠ হল পদার্থ।


পদার্থের রাসায়নিক ধর্ম কাকে বলে? রাসায়নিক ধর্মের সাহায্যে পদার্থকে কীভাবে শনাক্ত করা যায় ?

রাসায়নিক ধর্ম (Chemical properties) : যেসব ধর্ম থেকে পদার্থের মূল গঠনের এবং রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় পাওয়া যায়, সেইসব ধর্মকে পদার্থের রাসায়নিক ধর্ম বলে।

রাসায়নিক ধর্মের সাহায্যে পদার্থের শনাক্তকরণ : রাসায়নিক ধর্মের সাহায্যে কোনো পদার্থকে শনাক্ত করতে হলে পদার্থের ওপর বায়ু, জল, তাপপ্রয়োগ, তড়িৎক্রিয়া, অ্যাসিড, ক্ষার বা ক্ষারক, অন্যান্য কতকগুলি পদার্থের সংযোগে পদার্থের গঠনের কী পরিবর্তন হয় এবং কী কী নতুন পদার্থ উৎপন্ন হয়, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

(i) বায়ুর ক্রিয়া : বাতাসের সংস্পর্শে এসে পদার্থের নানা ধরনের পরিবর্তন হয়। যেমন—আর্দ্র বায়ুতে একটুকরো চকচকে লোহা ফেলে রাখলে মরচে উৎপন্ন হয়। সোনা, রুপো বায়ুতে ফেলে রাখলে কোনো পরিবর্তন হয় না।

(ii) জলের ক্রিয়া : জলের সঙ্গে বিভিন্ন পদার্থের বিক্রিয়া লক্ষ করে পদার্থকে শনাক্ত করা যায়। যেমন—সোডিয়াম বা পটাশিয়াম-এর মতো ধাতু জলের সংস্পর্শে এলেই তীব্র বিক্রিয়া করে প্রচণ্ড তাপ উৎপন্ন করে এবং আগুন জ্বলে ওঠে। একটুকরো সোনা বা রুপোকে জলে ফেললে কোনো পরিবর্তন হয় না৷


আইসোটোপ(Isotope) কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

আইসাটোপ (Isotope): একই মৌলের বিভিন্ন পরমাণু যাদের পারমাণবিক সংখ্যা এক, কিন্তু নিউক্লিয়াসে ভিন্ন সংখ্যক নিউট্রন থাকার জন্য ভরসংখ্যা আলাদা হয়, তাদের পরস্পরের আইসোটোপ বা সমস্থানিক বলে। যেমন— ক্লোরিনের দুটি আইসোটোপ হল— 17Cl35 এবং 17Cl37

জেনে রাখো: গ্রিক ভাষায় ‘iso' শব্দের অর্থ হল সমান এবং ‘topes' শব্দের অর্থ হল অবস্থান। আইসোটোপগুলি পর্যায় সারণিতে একই ঘরে অবস্থান করে বলে এদের সমস্থানিক বলে।

আইসোটোপের বৈশিষ্ট্যঃ
  1. কোনো মৌলের আইসোটোপগুলির পারমাণবিক সংখ্যা অর্থাৎ, প্রোটন সংখ্যা বা ইলেকট্রন সংখ্যা সমান কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা আলাদা হওয়ায় ভরসংখ্যা আলাদা হয়।
  2. এদের ইলেকট্রন বিন্যাস একইরকম হওয়ায় এদের রাসায়নিক ধর্ম এক হয়। 
  3. এদের ইলেকট্রন বিন্যাস একইরকম হওয়ায় এদের যোজ্যতা সমান হয়। 
  4. এদের ভৌত ধর্ম, যেমন- ঘনত্ব, ভর, গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক ইত্যাদি ভিন্ন হয়।

জেনে রাখা ভালোঃ চিকিৎসাবিজ্ঞানে ক্যানসার ও টিউমার চিকিৎসায় আয়োডিনের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ (l131) ব্যবহার করা হয়। এমনকি গাছ, পুরোনো শিলা এবং পৃথিবীর বয়স নির্ণয় করতেও কার্বনের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ (C14) ব্যবহৃত হয়।


প্রতিসরাঙ্ক কাকে বলে?

প্রতিসরাঙ্ক (Refractive index) : প্রতিসরাঙ্ক হল কোনো আলোকীয় মাধ্যমের উপাদানের এমন একটি ধর্ম, যার মানের ওপর ওই মাধ্যমে প্রবেশ করা অর্থাৎ, প্রতিসৃত আলোকরশ্মির গতির অভিমুখ এবং ওই মাধ্যমে আলোর বেগের মান নির্ভর করে।

প্রশ্ন | প্রতিসরাঙ্কের ভিত্তিতে আলোকীয় মাধ্যম কয় প্রকার ও কী কী? তাদের সংজ্ঞা দাও।

উত্তর  | প্রতিসরাঙ্কের ভিত্তিতে আলোকীয় মাধ্যম দুপ্রকার, যথা— (i) ঘন মাধ্যম, (ii) লঘু মাধ্যম।

ঘন মাধ্যম (Denser medium) : দুটি ভিন্ন আলোকীয় মাধ্যমের ভিতর যার পরম প্রতিসরাঙ্কের মান বেশি, তাকে ঘনতর বা ঘন মাধ্যম বলে।

লঘু মাধ্যম (Rarer medium) : যে মাধ্যমের পরম প্রতিসরাঙ্কের মান তুলনামূলকভাবে কম, তাকে লঘু মাধ্যম বলে।

অনুরূপ প্রশ্ন : আলোর ক্ষেত্রে একটি মাধ্যমের থেকে অন্য একটি মাধ্যম বেশি ঘন না লঘু তা কীভাবে ঠিক হয় ?

প্রশ্নঃ প্রতিসরাঙ্কের মান কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?

উত্তর |  প্রতিসরাঙ্কের মান তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে,

(i) মাধ্যমদ্বয়ের প্রকৃতি,
(ii) ব্যবহৃত আলোর বর্ণ,
(iii) মাধ্যমদ্বয়ের উষ্ণতা

প্রশ্নঃ বায়ু সাপেক্ষে কাচের প্রতিসরাঙ্ক 1.5 বলতে কী বোঝায়?

উত্তর | বক্তব্যটির অর্থ এই যে, আলোকরশ্মি বায়ু থেকে কাচে প্রতিসৃত হলে আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত হয় 1.5। অথবা নির্দিষ্ট বর্ণের আলোকরশ্মির জন্য বায়ু মাধ্যমে ও কাচ মাধ্যমে আলোর বেগের অনুপাত হয় 1.5।

প্রশ্নঃ তৈলাক্ত কাগজকে সামান্য স্বচ্ছ দেখায় কেন?

উত্তর | সাধারণ কাগজের তল অমসৃণ বলে সেই তলে আপতিত আলোকরশ্মির বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন ঘটে এবং সেটি প্রায় অস্বচ্ছ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। তবে তৈলাক্ত কাগজের পৃষ্ঠে পাতলা তেলের স্তর থাকে এবং এই কাগজের উপরিতলে আলোকরশ্মি এসে পড়লে তার একটি অংশ প্রতিসৃত হয়। অর্থাৎ, প্রতিসরণ ঘটার জন্যই তৈলাক্ত কাগজ অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছ বলে মনে হয়।


তাপের সুপরিবাহী(Good Conductor) ও কুপরিবাহী পদার্থ(Bad Conductor) কাকে বলে উদাহরণসহ বোঝাও।

উত্তর:

তাপ পরিবহণের ভিত্তিতে পদার্থ দু-প্রকার।

সুপরিবাহী পদার্থ (Good conductor): যে সকল পদার্থ সহজে তাদের নিজেদের মধ্য দিয়ে উষ্ণ অংশ থেকে শীতল অংশে তাপ সঞ্চালিত করে, তাদের তাপের সুপরিবাহী পদার্থ বা সংক্ষেপে পরিবাহী বলে।

উদাহরণ: লোহা, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, রুপো ইত্যাদি ধাতু এবং পারদ, গ্রাফাইট, গ্যাস কার্বন ইত্যাদি অধাতু।

কুপরিবাহী পদার্থ (Bad conductor): যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে তাপ সহজে এক অংশ থেকে অন্যত্র সঞ্চালিত হতে পারে না, তাদের কুপরিবাহী বা অন্তরক পদার্থ বলে। কুপরিবাহী পদার্থগুলির তাপ হস্তান্তরের ক্ষমতা নগণ্য বা উপেক্ষণীয় হয়।

উদাহরণ: কাঠ, প্লাস্টিক, মোম, রবার, বিশুদ্ধ জল, কর্ক, ইট, তুলা, কাগজ প্রভৃতি।


জাড্য (Inertia) কাকে বলে? ভৌতাবস্থানুযায়ী পদার্থ কয় প্রকার ও কী কী?

জাড্য (Inertia) কাকে বলে?

উত্তর। জাড্য (Inertia) : জড়বস্তুর ধর্ম হল এই যে, সেটি যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় থাকতে চায়। অর্থাৎ, স্থিরবস্তু চিরকাল স্থির থাকতে চায় এবং গতিশীল বস্তু চিরকাল গতিশীল অবস্থায় থাকতে চায়। জড়বস্তুর এই ধর্মকে জাড্য বলে। জাড্য দু-প্রকার–

(i) স্থিতি জাড্য, (ii) গতি জাড্য ।


ভৌতাবস্থানুযায়ী পদার্থ কয় প্রকার ও কী কী?

উত্তরঃ পদার্থ তিন প্রকার, যথা— (i) কঠিন (Solid), (ii) তরল (Liquid), (iii) গ্যাসীয় (Gas)। যেমন— লোহা কঠিন পদার্থ, জল তরল পদার্থ, বায়ু গ্যাসীয় পদার্থ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured Post

ব্রয়লার মুরগি কীভাবে তৈরি করা হয়?

উত্তর:  এটি একপ্রকার সংকর জাতের মুরগি। করনিস জাতের পুরুষ মুরগির সঙ্গে সাদা প্লিমাউথ রক জাতের স্ত্রী মুরগির মিলনে ব্রয়লার মুরগি তৈরি করা হয়...

Popular Posts