উত্তর:
মোটা কাগজের ঠোঙা বানিয়ে তাতে জল ঢেলে আগুনের শিখায় ধরলে জল ফোটানো যাবে না। কারণ— মোটা কাগজের মধ্যে দিয়ে তাপ তাড়াতাড়ি জলে যেতে পারবে না এবং আগুনের শিখার সংস্পর্শে থাকা কাগজের অংশটি খুব তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়ে যাবে। ফলে, কাগজটি পুড়ে যাবে।
শিশির কাকে বলে?
উত্তর | রাত্রে তাপ বিকিরণের ফলে ভূপৃষ্ঠ এবং তার সংলগ্ন বস্তুগুলির উষ্ণতা যখন ক্রমশ কমে তখন ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তরও শীতল হয়। অবশেষে উষ্ণতা একটি নির্দিষ্ট মানে অর্থাৎ, শিশিরাঙ্কে পৌছোলে, শীতল বায়ুতে উপস্থিত জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়। । বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কেরও নীচে নেমে গেলে, স্বাভাবিকভাবেই বায়ু তার ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত জলীয়বাষ্পকে আর নিজের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে পারে না। বায়ু দ্বারা পরিত্যক্ত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ছোটো ছোটো জলবিন্দুর আকারে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন ঘাস, পাতা ইত্যাদির উপরে জমা হয়। একেই শিশির (Dew) বলে।
পাতলা কাগজের পাত্রে কীভাবে জল ফোটানো যায় ?
উত্তর:
প্রথমে খাতার পৃষ্ঠার মাপের একটি পাতলা কাগজের চোঙ বা ফানেল তৈরী করে তার মধ্যে জল রাখা হল। এবার জলসহ
কাগজের পাতলা দিকটি আগুনের শিখায় ধরলে, কিছুক্ষণের মধ্যেই জল ফুটতে থাকে অথচ কাগজটি জ্বলে যায় না। এক্ষেত্রে, পাতলা কাগজের মধ্যে দিয়ে তাপ খুব তাড়াতাড়ি জলে চলে যায়। ফলে, জল স্ফুটনাঙ্কে পৌছে গেলেও কাগজটি তার জ্বলনাঙ্কে পৌঁছোয় না। তাই পাতলা কাগজের পাত্রে জল ফোটানো যাবে।
প্রশ্ন: সমস্ত পদার্থের নির্দিষ্ট গলনাঙ্ক বা হিমাঙ্ক থাকে কি? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর | সমস্ত পদার্থের নির্দিষ্ট গলনাঙ্ক বা হিমাঙ্ক থাকে না। যেমন অনিয়তাকার বা অকেলাসিত কঠিন পদার্থের (কাচ, মোম, মাখন ইত্যাদি) এবং মিশ্র পদার্থের নির্দিষ্ট গলনাঙ্ক থাকে না, পরিবর্তে এদের গলনাঙ্কের নির্দিষ্ট পাল্লা থাকে।
সাধারণ বায়ুচাপে উদ্বায়ী পদার্থগুলির ক্ষেত্রে গলনাঙ্কের অস্তিত্ব থাকে না।
কিছু কিছু রাসায়নিক পদার্থকে (HgO, CaCO) উচ্চ উষ্ণতায় উত্তপ্ত করার ফলে বিয়োজিত হয়ে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায়।
এদের ক্ষেত্রে গলনাঙ্কের ধারণা প্রযোজ্য নয়।
প্রশ্ন: ধাতু গলিয়ে ছাঁচে ঢেলে যে মূর্তিগুলি তৈরি করা হয় তা বিশেষ ধাতু ব্যবহার করে তৈরি করা হয় কেন ?
উত্তর | ধাতু গলিয়ে ছাঁচে ঢেলে মূর্তি তৈরি করার সময় সেইসব বিশেষ ধাতু ব্যবহার করা হয়, যারা তরল অবস্থা থেকে কঠিনে পরিণত হলে আয়তনে বাড়ে। এর ফলে, ছাঁচের সূক্ষ্ম কোনাগুলিতেও ধাতুগুলি পৌঁছোতে পারে ও মূর্তির ধারগুলি খুব সূক্ষ্ম হয়। যেমন—ঢালাই লোহা, পিতল ইত্যাদি।
প্রশ্ন: দুটি বরফের টুকরো একসঙ্গে কিছুক্ষণ চেপে ধরে রাখলে তারা জোড়া লেগে যায়। কেন এমন হয় ?
উত্তর | বরফের গলনের ফলে যে জল উৎপন্ন হয় তার আয়তন বরফের আয়তনের তুলনায় কম। চাপ বাড়ালে গলনে সুবিধা হয়। তাই চাপ বৃদ্ধি করলে বরফের গলনাঙ্ক হ্রাস পায়। দুটি বরফের টুকরো একসঙ্গে কিছুক্ষণ চেপে ধরে রাখলে সংযোগস্থলে বরফের গলনাঙ্ক কমে ও বরফ গলে একসময় জলে পরিণত হয়। চাপ উঠিয়ে নিলে গলনাঙ্ক আবার বাড়ে ও গলে যাওয়া জল আবার বরফে পরিণত হয়। ফলে, বরফের টুকরো দুটি জুড়ে যায়।
বাষ্পায়ন (Evaporation) কাকে বলে? বাষ্পায়নের হার কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর।
বাষ্পায়ন(Evaporation): যে-কোনো উষ্ণতায় তরলের উপরিতল থেকে তরলের ধীরে ধীরে বাষ্পে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে বাষ্পায়ন বলে।
বাষ্পায়নের হার নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ওপর নির্ভর করে—
(i) তরলের প্রকৃতি : এক-একটি তরলের ক্ষেত্রে বাষ্পায়নের হার এক-একরকম। যে তরলের স্ফুটনাঙ্ক ঘরের উয়তার যত কাছাকাছি হয়, তার বাষ্পায়নের হার তত বেশি হয়। যেমন ইথারের স্ফুটনাঙ্ক 35°C, আর জলের স্ফুটনাঙ্ক 100°C।
(ii) তরলের উপরিতলের বিস্তৃতি : তরলের উপরিতলের বিস্তৃতি বা ক্ষেত্রফল যত বেশি হয়, বাষ্পায়নের হারও তত বেশি হয়।
(iii) তরলের উদ্ভূতা : তরল ও তরল সংলগ্ন বায়ুর উহ্ণতা বাড়লে বাষ্পায়ন দ্রুত হয়। তাই ভিজে কাপড় রোদের তাপে যত তাড়াতাড়ি শুকায়, শীতল ছায়ায় ততটা শুকায় না।
(iv) বায়ুর শুষ্কতা : বায়ু যত শুষ্ক হয়, তার বাষ্প গ্রহণ করার ক্ষমতাও তত বেশি হয়।
(v) বায়ু চলাচল : তরলের ওপর বায়ু সঞ্চালন বাড়লে বাষ্পায়ন দ্রুত হারে হয়। যেমন—ঘরের ভিজে মেঝে তাড়াতাড়ি শুকানোর জন্য আমরা ফ্যান চালাই বা কালির লেখা তাড়াতাড়ি শুকানোর জন্য আমরা ফুঁ দিই।
(vi) তরলের ওপর বায়ুর চাপ : বায়ুমণ্ডলীয় চাপ যত কম হয়, বাষ্পায়নের হার তত বেশি হয়। তাই বাষ্পায়নের হার বাড়াতে তরলের ওপর বায়ুর চাপ কমাতে হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন