এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শুক্রবার, ২ এপ্রিল, ২০২১

শতমূলী কী কাজে ব্যবহৃত হয় ও কিভাবে চাষ করা হয়?

অর্থকরী কন্দ মূল ফসলের মধ্যে এর চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। অতিরিক্ত শ্রম নির্ভর চাষ নয়-কাজেই সহজে চাষ করা যায়।
শতমূলী

জাত: দেশী, লতাভরী।

বােনার সময়: বীজ পড়ে এমনিতেই হয় তবে বর্ষাকালে বীজ থেকে চারা তৈরী করে লাগানাে। যায়। মূল থেকে খুব ভালাে। চারা তৈরী হয়। এছাড়া ছােট ছােট শাখা কেটে বেডে বসিয়ে বর্ষাকালে চারা তৈরী করা হয়। বিঘা প্রতি চারা লাগে ১২০০-১৩০০।

জমি/মাটি: যে কোন মাটিতে হয় তবে দোঁয়াশ মাটিতে ভালাে হয়। জমিতে কোন অবস্থাতে জল না দাঁড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সেচ: সেচ লাগে না বললেই চলে, তবে বীজ থেকে চারা লাগানাের পর এক দুবার জল দিতে হয় এবং মাঝে মধ্যে খুব গরমের সময় চারা যদি ঝিমিয়ে যায় তবে এক দুবার সেচ দেওয়া যেতে পারে।

গাছের/সারির দুরত্ব: সারি থেকে সারি ও গাছ থেকে গাছ ১ মিটার দূরত্বে লাগানাে হয়। ৩০ সেমি দৈর্ঘ্য, ৩০ সেমি প্রস্থ এবং ৩০ সেমি গভীর গর্ত করতে হয়। প্রতি গর্তে আড়াই থেকে তিন কেজি গােবর অথবা আবর্জনা সার দিয়ে গর্ত ভর্তি করে রাখতে হবে। চারা লাগানাের ১৫ দিন আগে থেকে। বর্ষার শুরুতে গর্তের ঠিক মাঝখানে চারা বা বীচন লাগাতে হবে।

ফুল-ফলের সময়: ডিসেম্বর-এপ্রিল (শীতকাল –গরমকাল)।

বীজ সংগ্রহের সময়: ফেব্রুয়ারী এপ্রিল (গরমকালে)।

নার্সারি: ছােট ছােট মূল আলাদা করে প্যাকেটে বা বেডে বসাতে হবে এবং ঘন ঘন ঝারি দিয়ে জল দিতে হবে। ১০ দিনের পর থেকে শাখা মঞ্জুরী বের হতে থাকবে। এরপর মূল জমিতে সরাতে হবে।

ফসল তোলা: শতমূলী গাছ থেকে তৃতীয় বৎসরে কন্দ আলু তােলা হয়। ভালাে করে জলে পরিস্কার করে, শুকিয়ে গুদামজাত করতে হবে এমনভাবে যেন কন্দ মূল ছত্রাকের দ্বারা আক্রান্ত না হয়। তিন শতাংশ বরিক অ্যাসিডের দ্রবণে ২০ মিনিট ডুবিয়ে, দ্রবণ ঝড়িয়ে ছায়ায় শুকিয়ে নিলে ছত্রাক আক্রমণ প্রতিরােধ করা যায়।

ফলন: প্রতি গাছে কন্দ আলুর ফলন ৫-৭ কেজি পর্যন্ত পাওয়া যায়। বিঘা প্রতি আলুর ফলন প্রায় ১০,০০০-১৩,০০০ কেজি পর্যন্ত হয়।

রােগপােকা: কাঠা প্রতি দেড় থেকে দুই কেজি নীম খােল লাগানাের ৪০-৪৫ দিন বয়সে প্রথমবার ও ৭৫-৮০ দিন বয়সে ২য় বার গােড়ায় মাটি ধরানাের সময় জৈবসার হিসাবে ব্যবহার করলে সারের কাজও যেমন হয় তেমনি রােগ পােকাও সামাল দেওয়া যায়। কন্দ পচা (সফট রট) মাঝে মধ্যে দেখা যায়। এরােগ দেখা গেলে বিঘাপ্রতি ৩০০ গ্রাম টাইকোডারমা ভিরিডি নামে জীবাণুনাশক জৈবসারের সাথে মিশিয়ে শেষ চাষে মাটিতে মিশালে নিরাময় হয়। টাইকোডারমা ভিরিডি অথবা সুডােমনাস ফ্লুরােসেন্স নামক রােগ নাশক স্প্রে করলে নিরাময় হয়।

শতমূলী ব্যবহার: শতমূলী গাছের মূল, কান্ড উভয় অংশ ব্যবহার করা হয়। কচি ডগা খাদ্য হিসাবে, চিনি শিল্পে সুইটমিট হিসাবে, আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। মহিলাদের জিনিটাল সমস্যা, মুত্রনালীর সমস্যা, বাচ্চা না হওয়ার সমস্যা, পাকস্থলীর আলসার, গাঁটের সমস্যা, রক্ত আমাশয়, ডাইবেটিস সমস্যা, ডাইরিয়া, বাতের ব্যাথা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। সাবান শিল্পেও ব্যবহৃত হয়।

শতমূলী মায়েদের বুকের দুধ বাড়ায়, বলকারক পিত্তনাশক, রক্ত শোধন করে। কন্দ মূলের রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে, বধ হজম ও পেট খারাপ সাড়ে দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে।
শতমূলী



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured Post

ব্রয়লার মুরগি কীভাবে তৈরি করা হয়?

উত্তর:  এটি একপ্রকার সংকর জাতের মুরগি। করনিস জাতের পুরুষ মুরগির সঙ্গে সাদা প্লিমাউথ রক জাতের স্ত্রী মুরগির মিলনে ব্রয়লার মুরগি তৈরি করা হয়...

Popular Posts