দুর্ভিক্ষের সময় খাদ্য নিরাপত্তার ফসল হিসাবে খামালু বা চুপড়ি আলুর তুলনা নেই। তাই 'ফেমিন ফুড' হিসাবে এর এতাে সমাদর। সামান্য শ্রমে, অবহেলায় এর উৎপাদন অত্যন্ত উঁচু মানের। খাদ্য হিসাবে এর গুণমান কদ ফসলের মধ্যে তুলনীয়।
জাত: আকার ও আকৃতি বিশেষে এসুলে্ঠা ও এলাটা দুভাগে ভাগ করা যায়।
মেয়াদ: ৯-১০ মাস।
বােনার সময়: বর্ষা আসার আগে। গ্রীকালীন ফসল হিসাবে মার্চ-মে পর্যন্ত লাগানাে হয়।
জমি ও মাটি: যে কোনাে মাটিতে হয়। গভীর দোয়াশ, বেলে-দোয়াশ মাটি, ভালাে জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত জমিতে চাষ ভালাে। হয়। স্যাল জমা সহ্য করতে পারেনা।
সেচ: দরকার নেই। খড়া সহনশীল ফসল। মাটির সঞ্চিত রসেই চাষ চলে। তবে লাগানাের পর শুকনাে খড়, পাতা দিয়ে মালচ বা আচ্ছাদন দিলে অরােদাম ভালাে হয়।
বীচন: এক একটি এলাটা জাতের বীচ ২০০-২৫০ গ্রাম ওজনের অথবা এম্বুলেন্ঠার ক্ষেত্রে ১০০-১২৫ গ্রাম ওজনের বীচন (বীজ কন্দ) প্রতি মাদায় লাগাতে হয়। বিঘা প্রতি মােট বীচন, এলাটা জাতের ক্ষেত্রে ৮১০০ টিবা ২০০ কেজি এবং এলো জাতের ক্ষেত্রে ৫৬০০ টি বা ৪০০ কেজি লাগে।
সারি ও গাছের দূরত্ব: এলাটা ৯০x৯০ সেমি, এম্বুলেন্ঠা ৭৫x৭৫ সেমি।
সার: খামালু চাষে জৈব সারের ভূমিকা অসীম। প্রতি মাদায় দু-আড়াই কেজি জৈব সার ও তিন থেকে চারশাে গ্রাম কাঠের ছাই দিয়ে লাগালে ভাল হয়। প্রতি বিঘায় ৪-৫ টন জৈবসার ও ছাই দেওয়া প্রয়ােজন। রাসায়নিক সার মােটামুটিভাবে ৮ কেজি নাইট্রোজেন, ৮ কেজি ফসফেট ও ৮ কেজি পটাশ প্রতি বিঘায় দেবার সুপারিশ করা হয়।
সাথি ফসল: মাঠে চাষ করলে মাচার দরকার হয়। মাচার নীচে ছায়া সহনশীল ফসল চাষ করা যায়। বাশ বাগানে, কিষাণ বনে (এগ্রোফরেষ্টি) বা সাথী ফসল হিসাবে চাষ করা হয়ে থাকে।
উৎপাদন: এলাটা ২.৫-৩.৫ টন প্রতি বিঘায়, এস্কুলেন্টা ১.২৫-২ টন প্রতি বিঘায় হয়ে থাকে। বিশেষ রােগ পােকা দেখা যায়না।
মন্তব্য: মাঠে চাষের জন্য, বিশেষ করে এলাটা জাতের জন্য লতানাের মাচা বা গাছের ডাল পুতে লতানাের ব্যবস্থা করতে হবে। এম্বুলেন্ঠা জমিতে লতানাে অর্থাৎ মাচা না করলেও চলে। বেশি ফলনের জন্য উপযুক্ত মাচার দরকার হয়। গাছের কাছাকাছি লাগিয়ে সাধারণত গাছে চড়িয়ে দেওয়া হয়।