এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১

বাড়ি বানানোর উপাদানগুলি তাপের কুপরিবাহী হওয়ার দরকার কেন?

উত্তর:

বাড়ি বানানোর উপাদানগুলি তাপের কুপরিবাহী হওয়া দরকার। কারণ— উপাদানগুলি তাপের কুপরিবাহী হলে শীতকালে ঘরের ভিতর থেকে তাপ বাইরে যেতে পারবে না, ফলে ঘর গরম থাকবে আবার গ্রীষ্মকালে বাইরের তাপ ঘরের ভিতরে আসতে পারবে না। ফলে, ঘর ঠান্ডা থাকবে। একই কারণে খড়ের চালওয়ালা মাটির বাড়ি গ্রীষ্মকালে যেমন ঠান্ডা শীতকালে তেমন গরম থাকে।

শীতকালে পাখিরা কখনো কখনো পালক ফুলিয়ে বসে থাকে কেন?

উত্তর:

পালক ফুলিয়ে বসলে ঢুকে যায়। বায়ু তাপের কুপরিবাহী বলে দেহের তাপ বাইরে যেতে পারে না, বা বাইরের ঠান্ডা বায়ু ভিতরে আসতে পারে না। ফলে, দেহ গরম থাকে। তাই, শীতকালে পাখিরা পালক ফুলিয়ে বসে থাকে।

পাখি
ইগলু কী? এটি বরফ দিয়ে তৈরি করা হয় কেন ?

উত্তর:
গ্রিনল্যান্ডের থুলে অঞ্চলে এস্কিমোদের বাসস্থানকে ইগলু (Igloo) বলে।
ইগলু বরফ দিয়ে তৈরি করা হয়, কারণ— বরফ তাপের কুপরিবাহী এবং ওই অঞ্চলে সহজলভ্য। তাই বরফের মধ্যে দিয়ে তাপ চলাচল করে না এবং ইগলুর ভিতরটা গরম থাকে। ফলে ওই শীতল অঞ্চলের অধিবাসীরা প্রচণ্ড ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা পায়।
Igloo

তোমার কাছে গরম খাবার অনেকক্ষণ ধরে গরম রাখার পাত্র (যেমন— ফ্লাস্ক) নেই। অথচ কোনো গরম খাবার তোমাকে অনেকক্ষণ গরম রাখতে হবে। তুমি কী কী করবে? কেন করবে?

উত্তর:

দুই খণ্ড মোটা কাগজের টুকরোর মধ্যবর্তী অংশ শুকনো কাপড়, তুলো (ফেল্ট) বা পশম জাতীয় পদার্থ দ্বারা পূর্ণ করে একটি তাপরোধী মোড়ক তৈরি করে তার মধ্যে গরম খাবার রাখলে তা দীর্ঘ সময়ের জন্য গরম থাকবে।

কারণ—কাগজ ও তুলো সহজলভ্য এবং তাপের কুপরিবাহী পদার্থ। দুটি কাগজখণ্ডের মাঝে তুলো থাকায় তার মধ্যে আবদ্ধ বায়ুও একটি কুপরিবাহী আস্তরণ গঠন করে, সুতরাং এই ব্যবস্থা অবলম্বন করলে পরিবহণ, পরিচলন ও বিকিরণ পদ্ধতিতে গরম খাদ্যবস্তু থেকে পরিবেশে তাপ সঞ্চালন হয় না। সুতরাং, ব্যবস্থাটি একটি থার্মোফ্লাস্কের মতো আচরণ করে এবং খাদ্যবস্তু দীর্ঘসময় পর্যন্ত গরম থাকে।

তুমি যে বাড়িতে থাকো তার দেয়ালগুলি ও ছাদ যদি টিনের হত, তবে কী কী সুবিধা হত আর কী কী অসুবিধা হত?

উত্তর:

সুবিধা: 
১। বাড়ির দেয়াল ও ছাদ টিনের হলে সহজেই খুব কম খরচে বাড়ি তৈরি করা যেত।
২। টিন অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় ধাতু হওয়ায় বায়ুর অক্সিজেন ও জলীয়বাষ্পের সঙ্গে সহজে বিক্রিয়া করে না, ফলে মরচে পড়া বা প্রাকৃতিকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

অসুবিধা: টিনের তাপ পরিবহণ ক্ষমতা যথেষ্ট বেশি হওয়ায় গ্রীষ্মকালে বাইরের বায়ু থেকে তাপ দ্রুত ও অধিক পরিমাণে ঘরে প্রবেশ করে এবং শীতকালে ঘরের ভিতরের আবদ্ধ বায়ু থেকে তাপ দ্রুত বাইরে পরিবাহিত হয়। অর্থাৎ, গ্রীষ্মকালে ঘর প্রচণ্ড গরম এবং শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডা হয়ে যাবে।

শীতকালে বদ্ধঘরে হ্যারিকেন বা আগুন জ্বালিয়ে শোয়া বিপজ্জনক কেন?

উত্তর:
হ্যারিকেন বা আগুন জ্বালালে কেরোসিন বা কয়লার দহনে কার্বন ডাইঅক্সাইডের সঙ্গে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসও তৈরি হয়। শীতকালে দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় বদ্ধঘরে অক্সিজেন চলাচলও করতে পারে না। ফলে, বিষাক্ত গ্যাসগুলির পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে এবং ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরের বাসিন্দাদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তাই শীতকালে বদ্ধঘরে হ্যারিকেন বা আগুন জ্বালিয়ে শোয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক।

জ্বলন্ত উনুনের পাশের দিকে হাত রাখলে যত গরম লাগে উনুনের উপরের দিকে হাত রাখলে অনেক বেশি গরম লাগে। কেন এমন হয় বলো?

উত্তর:
জ্বলন্ত উনুনের উপরের দিকে যে বায়ুর স্তর থাকে, তা উনুনের তাপে উত্তপ্ত হয় ও আয়তনে প্রসারিত হয়। ফলে ওই বায়ুর ঘনত্ব কমে যায় ও বায়ু হালকা হয়। এই গরম ও হালকা বায়ু উপরে উঠে গেলে উপরের অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা ও ভারী বায়ু উনুনের পাশ দিয়ে পৃথিবীর টানে নীচে নেমে আসে। তাই জ্বলন্ত উনুনের পাশে হাত রাখলে যত গরম লাগে উনুনের উপরের দিকে হাত রাখলে তার চেয়ে অনেক বেশি গরম লাগে।

 

শীতকালে আমরা উলের তৈরি পোশাক পরি কেন?

উত্তর:

উলের পোশাকে সুতোর মাঝে মাঝে বায়ু আটকে থাকে। বায়ু তাপের কুপরিবাহী বলে, দেহ থেকে তাপ বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে না বা বাইরের ঠান্ডা বায়ু দেহে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে, দেহ গরম থাকে। একারণে, শীতকালে আমরা উলের পোশাক পরি।


শীতকালে হাতি গায়ে ধুলো মাখে কেন?

উত্তর:

হাতি গায়ে ধুলো মাখলে তার গা ও ধুলোর মাঝে একটি বায়ুস্তর তৈরি হয়। বায়ু তাপের কুপরিবাহী বলে দেহ থেকে বেরিয়ে আসা তাপ বায়ুর স্তর ভেদ করে বাইরে যেতে পারে না। ফলে হাতির আরাম লাগে। একারণে শীতকালে হাতি গায়ে ধুলো মাখে।


বরফ যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় তখন বরফের গায়ে কাঠের গুঁড়ো মাখানো হয় কেন? বা চট জড়িয়ে দেওয়া হয় কেন?

উত্তর:

বরফের গায়ে কাঠের গুঁড়ো মাখালে বা চট জড়িয়ে দিলে কাঠের গুঁড়োর ফাকে ফাকে বা চটের সুতোর ফাকে ফাকে বায়ু ঢুকে যায়। বায়ু তাপের কুপরিবাহী বলে বাইরে থেকে তাপ বরফে ঢুকতে পারে না, তাই বরফ গলে যায় না। একারণে বরফ যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়, তখন বরফের গায়ে কাঠের গুঁড়ো মাখানো হয় বা চট জড়িয়ে দেওয়া হয়।



শীতকালে সুতোর তৈরি একটি মোটা জামা পরলে গরম লাগে। কিন্তু, তার বদলে একই ধরনের সুতো দিয়ে তৈরি দুটি পাতলা জামা পরলে আরও বেশি গরম লাগে কেন?
উত্তর:

সুতোর তৈরি একটি মোটা জামা পরলে সুতোর ফাঁকে ফাকে যে পরিমাণ বায়ু আটকে থাকে, তার বদলে এই ধরনের সুতো দিয়ে তৈরি দুটি পাতলা জামা পরলে আরো বেশি পরিমাণ বায়ু আটকে থাকে। বায়ু তাপের কুপরিবাহী বলে যত বেশি বায়ু আটকে থাকবে, দেহ থেকে তত কম তাপ বেরিয়ে আসতে পারবে। আবার দেহ থেকে যত কম তাপ বেরোবে দেহ তত গরম থাকবে। তাই শীতকালে একটি জামার পরিবর্তে দুটি জামা পরলে বেশি গরম লাগে।


দুধ গরম করলে উথলে ওঠে কেন?

উত্তর। উষ্ণতা বৃদ্ধিতে কঠিন পদার্থের আয়তনের তুলনায় তরল পদার্থের আয়তন বৃদ্ধি বেশি হয়। দুধ গরম করার সময় দুধের ওপর তৈলাক্ত পদার্থের সর পড়ে। এই সর ভেদ করে জলীয়বাষ্প বাইরে আসতে পারে না, ফলে দুধ উথলে ওঠে।



ভৌত ধর্ম ও রাসায়নিক ধর্মের মধ্যে কোন্ ধর্ম দ্বারা পদার্থের শনাক্তকরণ অধিক গ্রহণযোগ্য ও কেন?

উত্তর । ভৌত ধর্ম দ্বারা কোনো পদার্থের শনাক্তকরণে তা অপচয় বা নষ্ট হয় না কিন্তু এই ধর্মের সাহায্যে পদার্থকে আংশিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব। অন্যদিকে, রাসায়নিক ধর্ম দ্বারা কোনো পদার্থের শনাক্তকরণে পদার্থের পরিবর্তন ঘটে নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থ উৎপন্ন হয়। এই ধর্মের সাহায্যে পদার্থের গঠন সংক্রান্ত ধারণা পাওয়া যায় যা পদার্থকে নির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করতে সাহায্য করে। তাই, ভৌত ধর্ম ও রাসায়নিক ধর্মের মধ্যে রাসায়নিক ধর্ম দ্বারা পদার্থের শনাক্তকরণ অধিক গ্রহণযোগ্য৷


পুকুরের জলে একটি গাছের কী ধরনের প্রতিবিম্ব গঠিত হয়?

উত্তর | জলাশয়ের উপরিতল সমতল দর্পণের মতো আচরণ করে, তাই গাছ থেকে আগত রশ্মি প্রতিফলিত হয়ে প্রতিবিম্ব গঠন করে। যেহেতু সমতল দর্পণে গঠিত প্রতিবিম্ব অসদ্ ও সমশীর্ষ হয়, তাই এক্ষেত্রেও গঠিত প্রতিবিম্ব অসদ্ ও সমশীর্ষ হবে।


বস্তুর দূরত্ব ও প্রতিবিম্বের দূরত্ব সমান হওয়াকে ব্যবহার করে প্রতিবিম্ব আঁকলে প্রতিবিম্ব আঁকা কখনও শেষ হবে কি?

উত্তর। এক্ষেত্রে গঠিত প্রতিবিম্বের সংখ্যা অসীম। তাই, বস্তু দূরত্ব = প্রতিবিম্ব দূরত্ব এই সম্পর্ক ব্যবহার করে প্রতিবিম্ব আঁকতে থাকলে প্রতিবিম্ব আঁকা কখনোই শেষ হবে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured Post

ব্রয়লার মুরগি কীভাবে তৈরি করা হয়?

উত্তর:  এটি একপ্রকার সংকর জাতের মুরগি। করনিস জাতের পুরুষ মুরগির সঙ্গে সাদা প্লিমাউথ রক জাতের স্ত্রী মুরগির মিলনে ব্রয়লার মুরগি তৈরি করা হয়...

Popular Posts